কুমিল্লায় স্কুলছাত্রীর বাল্য বিয়ে বন্ধের সময় তাকে নিয়ে লাইভ করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন ভূঁইয়া। তার করা ৮ মিনিট ১২ সেকেন্ডের লাইভ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বাল্য বিয়ে বন্ধ করে চেয়ারম্যান ওই ভিডিও প্রকাশ করায় সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
লাইভের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা। এ নিয়ে শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) তিনি এই প্রতিবেদকের নিকট বিরক্তি প্রকাশ করেন। ঘটনাটি ঘটে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার দক্ষিণ শিলমুড়ি ইউনিয়নের।
জানা গেছে, ২২ জানুয়ারির ভিডিওটি সরাসরি প্রচার হয় চেয়ারম্যান হাজী ফারুক সমর্থক নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে।
ভিডিওতে দেখা যায়, এক কিশোরীর (১৪) বিয়ে বন্ধ করতে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে নিয়ে তার বাড়িতে যান। সেখানে কিশোরীকে দেখিয়ে দেখিয়ে তার বিয়ে বন্ধ করছেন বলে প্রচার করেন চেয়ারম্যান। সেই সঙ্গে নানান পরামর্শ দেন। এ সময় চেয়ারম্যান তার তার নাম, বাবার নাম, বাড়ির নাম, স্কুলের নাম, শ্রেণিসহ সম্পূর্ণ পরিচয় লাইভে বলেন। চেয়ারম্যান ফারুক ওই কিশোরীকে দিয়ে লাইভে বিয়ে না করার পণ করান। সেই সঙ্গে ছোট বোনসহ দুই জনের দায়িত্ব নেওয়ার কথাও জানান। লাইভেই তিনি তাদের পড়াশোনার দায়িত্ব নিতে যত টাকা দরকার তা দেবেন বলে ঘোষণা দেন। এ সময় সঙ্গে থাকা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা চেয়ারম্যানের কথায় একাত্মতা প্রকাশ করে বাল্য বিয়ে না করতে উদ্বুদ্ধ করেন।
কুমিল্লার প্রত্যয় উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মাহমুদা আক্তার বলেন, চেয়ারম্যান সাহেব এক অপরাধ বন্ধ করতে গিয়ে নিজে বড় অপরাধ করে বসেছেন। নিজেকে শো করতে গিয়ে কিশোরীর ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে ফেলেছেন। কিশোরীকে লাইভে আনা তার মোটেও ঠিক হয়নি।
অভিযুক্ত দক্ষিণ শিলমুড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন ভূঁইয়ার ফোনে একাধিকবার কল ও মেসেজ দেওয়ার পরও তিনি সাড়া দেননি। তাই তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে পরামর্শ দেওয়া বরুড়া উপজেলার মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আফরোজা বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমি ওনার আগেই গিয়েছি ঘটনাস্থলে। ওনাকে (চেয়ারম্যান) মা ও মেয়ের সাথে কথা বলতে বলেছি। হঠাৎ দেখি উনি রেকর্ড করা শুরু করে দিয়েছেন। একটা কিশোরীকে এভাবে শো করাটা আমিও সাপোর্ট করি না। সামনে তাকে বিয়ে দিতে হবে না?
মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আরও বলেন, কাজটি ঠিক হয়নি। চেয়ারম্যান সাহেব তার প্রচারের জন্য এই কাজটা করেছেন। চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করবো যেন ভিডিওটা কেটে দেন।
