বিনা খরচে বিয়ে আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রামের আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশন। যৌতুক ও দেনমোহরের ভারমুক্ত বিয়ের উদাহরণ সৃষ্টি করতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর-কনের জন্য বিয়ের পোশাক থেকে শুরু করে আনুষঙ্গিক সব কিছু ফাউন্ডেশন থেকে বিনামূল্যে দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, বিয়ের রেজিস্ট্রেশন ফি, অতিথিদের খাবারের ব্যবস্থা এবং নবদম্পতির জন্য কক্সবাজারে ফ্রি হানিমুন প্যাকেজও থাকছে। শুধু বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফাউন্ডেশনে আবেদন করলেও এসব সুবিধা পাওয়া যাবে।
তবে এই আয়োজনের অন্যতম শর্ত হলো—বিয়ে হবে যৌতুকবিহীন এবং নির্ধারিত দেনমোহর কনেকে নগদ পরিশোধ করতে হবে। পুরো আয়োজনটি ইসলামি সুন্নাহ অনুযায়ী সম্পন্ন হবে।
শামসুল হক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিয়ের আয়োজনটি আগামী ১৮ জানুয়ারি চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হবে। চট্টগ্রামের বাইরের পাত্র-পাত্রীরদের জন্য ফ্রি এসি বাসের টিকিট সরবরাহ করা হবে।
শামসুল হক ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা গেছে, ‘বিয়ে আপনার, খরচ আমাদের’ স্লোগানে শামসুল হক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শুভ বিবাহ শিরোনামে আগামী ১৮ জানুয়ারি ২৪ জন বর-কনে তথা এক ডজন বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। দেনমোহরের বিশাল অঙ্ক এবং যৌতুকের ভার বহু পরিবারের জন্য অসহনীয় হয়ে উঠেছে। সমাজবিরোধী এই প্রথা বন্ধ করতে সহজ পদ্ধতিতে বিয়ে এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য। যৌতুকবিহীন এবং দেনমোহর পরিশোধের শর্তে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে গত ৩১ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত আবেদন সংগ্রহ করা হয়। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলা, দুবাই, সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য ও ভারতসহ কয়েকটি দেশ থেকে ৫৯৫ জন পাত্র-পাত্রী আবেদন করেছেন।
এসব তথ্য জানিয়েছেন শামসুল হক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আমরা বিনা খরচের বিয়ের আয়োজনটি শুরু করেছিলাম ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। তখন কম সাড়া পেয়েছি এবং আমাদের কাছে আবেদন করা তিন যুগলের বিয়ে সম্পন্ন করেছিলাম। এবার অবিশ্বাস্য সাড়া পেয়েছি। ইতিমধ্যে আমাদের কাছে ৫৯৫ যুগলের আবেদন জমা পড়েছে। বিভিন্ন জেলা থেকে আবেদন পড়েছে। এমনকি দেশের বাইরে থেকেও আবেদন এসেছে। প্রাথমিকভাবে আগামী ১৮ জানুয়ারি ২৪ জন বর-কনে তথা এক ডজন যুগলের বিয়ে সম্পন্ন করা হবে।’
প্রথমে এক ডজন যুগলের বিয়ের আয়োজন করলেও পরে আরও বাড়ানো হবে জানিয়ে নাছির উদ্দিন বলেন, ‘সেক্ষেত্রে ডোনারের ব্যবস্থা করতে পারলে আমরা জেলায় জেলায় গিয়ে বাকি বিয়েগুলো সম্পন্ন করবো। কারণ একেকটি বিয়ের আয়োজনে অনেক অর্থের প্রয়োজন পড়বে। ডোনার পেলে বাকি আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করে যোগ্যদের বিবেচিত করা হবে। পরে তাদেরও বিয়ের আয়োজন করা হবে।’
শামসুল হক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে জানিয়ে ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘শুধু বিয়ে আয়োজনের মধ্যেই এটি সীমাবদ্ধ থাকছে না। আমাদের পক্ষ থেকে বিয়ের রেজিস্ট্রেশন ফি, বর-কনের সাজসজ্জা, প্রসাধনী সামগ্রী, গয়না, নবদম্পতির ঘরের আসবাবপত্র, প্রতি বিয়েতে ১০০ অতিথির খাবারের ব্যবস্থা, কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া ও কক্সবাজারে হানিমুন প্যাকেজ দেওয়া হবে। এটি সেবামূলক ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। মানুষের অর্থায়নে পরিচালিত হয়।’