লক্ষ্মীপুরে এক সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জামাল উদ্দিন নামে এক জামায়াত কর্মীর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক আ হ ম মোশতাকুর রহমান লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী সাংবাদিক আ হ ম মোশতাকুর রহমান লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের সাবেক নির্বাচিত সভাপতি। বর্তমানে দৈনিক নয়া দিগন্তের জেলা প্রতিনিধি ও সাপ্তাহিক লক্ষ্মীপুর দিগন্ত নামক পত্রিকার সম্পাদক।
অভিযুক্ত জামায়াত কর্মী জামাল উদ্দিন পৌর ১৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মাওলানা মহিব উল্লাহর ছেলে।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় আমির ডা. শফিকুর সাহেব লক্ষ্মীপুর সার্কিট হাউসে আসেন। এ সময় তিনি কয়েকজন সাংবাদিকসহ পেশাগত দায়িত্ব পালনের উদ্দেশে সার্কিট হাউজ এলাকায় যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন সাংবাদিকদের ভেতরে প্রবেশ নিষেধ। তখন সাংবাদিকরা সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য সার্কিট হাউজের বাইরে রাস্তার পাশে দাঁড়াবার চেষ্টা করেন। এতেও দলীয় কর্মীরা বাধা দেন এবং হাত দিয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করেন। এ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কিছুটা বাগবিতণ্ডা হয়।
এক পর্যায়ে অভিযুক্ত জামায়াত কর্মী জামাল উদ্দিন এসে সাংবাদিক মোশতাকুর রহমানের উপর উত্তেজিত হয়ে গালাগালি করে করতে থাকেন। শত শত মানুষের সামনে সাংবাদিকদের অপমান অপদস্থ করেন। বার বার তার দিকে তেড়ে আসেন। উপস্থিত লোকদের হস্তক্ষেপে সে সময় তিনি রক্ষা পান।
সাংবাদিক মোশতাকুর রহমান দাবি করেন, গত ২২ এপ্রিল রাতে শহরের দক্ষিণ তেমুহনী এলাকায় আমাদের জুনিয়র এক সাংবাদিককে মারধর করে পুলিশে দেওয়া হয়। তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি কে বা কারা নিয়ে গেছে। আমি একজন সিনিয়র সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সাবেক নির্বাচিত সভাপতি হওয়ায় আমার সহকর্মীদের পক্ষ থেকে আমাকে থানায় এসে তাকে ছাড়িয়ে আনতে সহায়তা করার জন্য অনুরোধ করে। ইতিমধ্যে আমি নিজে খোঁজ নিয়ে এবং বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারি ওই সাংবাদিক একটি মামলার এজহারভুক্ত আসামি। তাই আমি এ বিষয়ে কোনও চেষ্টা না করে তাকে মারধর করা এবং তার মোটরসাইকেল ফেরত পাওয়ার উদ্দেশে আমার ফেসবুক আইডিতে ক্ষুদ্র একটি পোস্ট করি। যাতে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি কিংবা কাউকে দায়ী করা হয়নি।
তিনি বলেন, এরপর থেকেই অভিযুক্ত জামাল উদ্দিন আমাকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে অজ্ঞাত কারণে হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। এমনকি আমার ওপর হামলা করবে, অপমান করবে- এ জন্য আমাকে হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছেন। আমার অবস্থান নির্ণয় করার জন্য ঘটনার দিন ২২ এপ্রিল থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর থেকে কমপক্ষে ১০ বার এবং অজ্ঞাত নম্বর থেকে অসংখ্য বার কল দিয়েছেন। এমতাবস্থায় আমি জীবনের নিরাপত্তাহীনতা ও আতঙ্ক নিয়ে দিন পার করছি। এ বিষয়ে আমি লক্ষ্মীপুর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি।
এ বিষয়ে পৌর জামায়াতের আমির আবুল ফারাহ নিশান জানান, জামাল হোসেন জামায়েতের সক্রিয় কর্মী। সাংবাদিককে হুমকির বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর সদর থানার ওসি আব্দুল মন্নাফ জানান, এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।