কক্সবাজারের টেকনাফে মানব পাচারকারীদের ‘জিম্মিঘর’ থেকে ১৪ জন অপহৃতকে উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শনিবার (১০ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের উত্তর লম্বরী এলাকার সাইফুল ইসলামের বাড়ি থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। তবে এ সময় কোনও দালালকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, ‘টেকনাফ ও আশপাশের এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই মানব পাচার ও অপহরণের মতো অপরাধ সংঘটিত হয়ে আসছে। এসব অপরাধ দমনে আমরা নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। এরই ধারাবাহিকতায় অপহরণ করে জিম্মি করে রাখা ১৪ জনকে নিরাপদভাবে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। কারা এই অপহরণে জড়িত, কী উদ্দেশ্যে তাদের অপহরণ করা হয়েছে—তা জানতে আমরা ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলছি। বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উদ্ধার হওয়া ভুক্তভোগী কক্সবাজারের বাসিন্দা মো. কাসেম ও মহিন উদ্দিন বলেন, ‘আমরা ইনানীতে বেড়াতে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে এক সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের প্রলোভনে টেকনাফে গেলে আমাদের অপহরণ করে জোরপূর্বক একটি বাড়িতে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। সেখানে আরও বেশ কয়েকজনকে জিম্মি করে রাখা হয়েছিল। আমাদের মারধর করে পরিবারের কাছে ভিডিও পাঠিয়ে এক লাখ টাকা করে দুই লাখ টাকা আদায় করা হয়। এরপরও ১৮ দিন ধরে আমাদের জিম্মি করে রাখা হয়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল সাগরপথে পাচার করে দালালদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া। অবশেষে বিজিবি এসে আমাদের উদ্ধার করে, তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘সাইফুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে অপহরণ ও মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত। তার বাড়ি থেকেই এই ১৪ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচিত তাকে ও তার চক্রকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা, নইলে এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটতেই থাকবে।’
বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মানব পাচার ও অপহরণ প্রতিরোধে যৌথ বাহিনীর অভিযানে আরও জোর দেওয়া হবে।