চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অনুষ্ঠিত হয়েছে বার্ষিক নিরাপত্তা মহড়া-২০২৫। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বেলা ১১টায় আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী এ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। এই মহড়ার মূল লক্ষ্য ছিল- যদি কোনও উড়োজাহাজ হাইজ্যাক,অগ্নিনিরাপত্তা, বোমা বা বোমাসদৃশ বস্তু পাওয়া যায়, সে পরিস্থিতিতে যাত্রীদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া এবং বোমা নিষ্ক্রিয় করার পদ্ধতি অনুশীলন করা।
দুই বছর পর পর এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। এবারের মহড়ায় অংশ নেয় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক), বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি), র্যাব, ফায়ার সার্ভিস, বিমানবন্দর ও বিমানবাহিনীর চিকিৎসকদল এবং চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালসহ অন্যান্য সংস্থা।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, ‘এ নিরাপত্তা মহড়ায় শেষ পর্যন্ত কোনও বেসামরিক বিমান না পাওয়ায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিশেষ সহায়তায় সামরিক পরিবহন উড়োজাহাজ এএন-৩২ ও হেলিকপ্টার এমআই-১৭ এর মাধ্যমে মহড়াটি বাস্তবায়ন করা হয়।’
এ মহড়ায় দেখানো হয়, দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে আসা একটি উড়োজাহাজ (নেপচুন-৭৮৯) শাহ আমানত বিমানবন্দরের উদ্দেশে আসছিল। অবতরণের ২৫ মিনিট আগে বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণকক্ষে একটি অজ্ঞাত ফোনকলের মাধ্যমে জানানো হয়- যে উড়োজাহাজটিতে বোমা রয়েছে। বিষয়টি যাচাই করে সত্যতা পাওয়া গেলে বিমানবন্দরের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে অবহিত করা হয় এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
পরবর্তীতে উড়োজাহাজটি অবতরণ করলে ভেতরে থাকা ৩০ যাত্রী ও ৫ জন ক্রুকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। গুরুতর আহত একজন যাত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় বিশেষায়িত হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এরপর বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট প্রথমে উড়োজাহাজ তল্লাশি চালিয়ে দুটি বোমা শনাক্ত করে। এবং তা নিরাপদে উদ্ধার করে। এরপর বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর বিশেষায়িত সদস্যদের সমন্বিত প্রচেষ্টায় অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে বোমা দুটি নিষ্ক্রিয় করা হয়।
উড়োজাহাজ অবতরণের সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তা ভয় গঠনের দায়িত্বে ছিল বিমানবন্দরে নিরাপত্তা ইউনিট, বিমান বাহিনীর দ্রুত প্রতিক্রিয়া দান দল ও বাংলাদেশ আনসার।
মহড়ায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া। এতে উপস্থিত ছিলেন বেবিচক, বাংলাদেশ বিমানবাহিনী, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, স্থানীয় জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন এয়ারলাইন্সসহ মহড়ায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।