ফেনীর দাগনভূঞা খাদ্যগুদামে ধান কেনার ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় কৃষকরা। দালাল সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য এবং দুর্নীতিপ্রবণ কর্মকর্তাদের প্রভাবে ন্যায্যমূল্যে ধান বিক্রি করতে পারছেন না তারা। এ নিয়ে বুধবার ১৬ জন কৃষক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, খাদ্যগুদামে ধান সরবরাহ করতে গেলে টনপ্রতি দুই হাজার টাকা ঘুষ দাবি করা হয়। ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের ধান ফিরিয়ে দেওয়া হয়। গুদামে দালাল চক্রের সদস্যদের সক্রিয় উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এই চক্র রামনগর ও ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের কৃষকদের নাম ব্যবহার করে ৩৩৫ টন ধানের ৮০ শতাংশ নিজেদের নামে ক্রয় দেখিয়েছে।
বারাহীগোবিন্দ গ্রামের কৃষক আবদুর রহিম বলেন, আমরা ঘুষ দিতে অস্বীকার করেছি বলে আমাদের ধান ফেরত দেওয়া হয়েছে। এটা খুব অন্যায়।
কৃষক সাদেক হোসেন বলেন, আমরা ধান নিয়ে গুদামে গিয়েছিলাম। কিন্তু ঘুষ না দিলে ধান নেওয়া হবে না বলে জানানো হয়। দালালরা ঠিকই তাদের ধান জমা দিতে পারছে।
কৃষক হানিফ মিঞা অভিযোগ করেন, সরকারি গুদামে ধান দেওয়ার কোনও সুযোগ পাচ্ছি না। দালালরা আমাদের কার্ড কিনে ধান সরবরাহ করছে।
একই কথা বলেছেন কৃষক আবু তালেব। তিনি বলেন, আমরা অনেক কষ্টে ধান উৎপাদন করেছি। কিন্তু গুদামে ধান দেওয়ার ক্ষেত্রে এতো হয়রানির শিকার হচ্ছি যে আমরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছি।
এ অবস্থায় খাদ্যগুদামে দুর্নীতি এবং দালাল সিন্ডিকেটের কার্যক্রম বন্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ চেয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত এসব কৃষক।
এ বিষয়ে দাগনভূঞা খাদ্যগুদামের এলএসডি নুরুল করিম বলেন, বরাদ্দ সীমিত থাকার কারণে কিছু ধান নেওয়া সম্ভব হয়নি। দালাল সিন্ডিকেটের সঙ্গে আমাদের কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স. ম. আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘কৃষকের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’