গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ার বিভিন্ন গ্রামে ধাপের ওপর সবজি চাষ দিন দিন বেড়ে চলেছে। কচুরিপানা দিয়ে তৈরি ধাপ পদ্ধতির মাধ্যমে এখানকার কৃষকেরা বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি উৎপাদন করছেন। এতে এলাকার সবজির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি তাদের আর্থিক অবস্থারও উন্নতি করতে পারছেন।
টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা নিম্নাঞ্চল। এ এলাকার কৃষকরা কচুরিপানার ধাপ বানিয়ে সার ও কীটনাশক ছাড়াই সবজি উৎপাদন করছেন। বিশেষ করে সম্প্রতি বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হলেও ধাপের ওপর চাষ করা সবজি কিন্তু নষ্ট হয়নি। ফলে চাষিরা এখন ভালো দামে বীজ বিক্রি করছেন।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার মিত্রডাঙ্গা গ্রামের শক্তি কির্ত্তনীয়া, বন্যাবাড়ি গ্রামের বরেন বিশ্বাস, ভূপতি বিশ্বাসসহ বেশ কয়েকজন ধাপ চাষি জানান, তাদের গ্রামসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের চাষিরা ধাপ পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে ভালো আছেন। শুধু এই এলাকায়ই নয়, কোটালীপাড়া এবং গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা ও কাশিয়ানী উপজেলার অনেক গ্রামে ধাপ পদ্ধতিতে সবজি চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কোনোরকম সার বা কীটনাশক ব্যবহার না করায় এখানকার উৎপাদিত সবজির চাহিদা বেশ। ধাপের ওপর ঢেঁড়শ, লালশাক, পুঁইশাক, শসা প্রভৃতি চাষ করে ভালো আছেন এখানকার কৃষকেরা।
গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায় বলেন, গোপালগঞ্জের অন্তত ২০ হাজারটি ধাপের ওপর চলছে এ চাষাবাদ। আর এর সঙ্গে জড়িত রয়েছেন ৩ সহস্রাধিক কৃষক। এ সময়ে নিম্ন জলাভূমি এলাকার মানুষের হাতে কোনও কাজ থাকে না। ধাপের ওপর সবজি চাষ করে তারা ভালোই আছেন।
তিনি জানান, বন্যা আসুক আর বৃষ্টি-বর্ষা আসুক, এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা সবজিতে তার কোনও প্রভাব পড়ে না। তাছাড়া কীটনাশক ও সারবিহীন উৎপাদিত এই সবজি এলাকার মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয়। আর তাই কৃষকেরাও সবজি বিক্রি করে বেশ ভালো আছেন এ সময়টাতে।
গোপালগঞ্জের ব্যাপক এলাকা নিম্ন জলাভূমি অঞ্চল। সরকারি সহযোগিতা পেলে এ জলাভূমিতে ধাপের ওপর সবজি চাষ করে জেলার কৃষকেরা ব্যাপকভাবে সাফল্য পেতে পারেন।