জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। তবে দিবসটি উপলক্ষে ফরিদপুর সদর উপজেলার পদ্মার চর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আয়োজন স্থানীয়দের মধ্যে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। বিদ্যালয়টিতে ডিজে ও হিন্দি গানের সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নাচেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নাচ-গানের একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় অনলাইন ও অফলাইনে চলছে সমালোচনার ঝড়।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া কয়েকটি ক্লিপে দেখা যায়, স্টেজে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও শিশু দিবসের আলোচনা সভার ব্যানার টাঙানো। স্টেজে একক, দ্বৈত ও দলগতভাবে নাচছেন ছাত্রীরা। সামনে নাচছেন ছাত্ররা। এসময় স্টেজের উপরে ও আশপাশে একাধিক শিক্ষককেও দেখা যায়।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উকিল উদ্দিন সরদার বলেন, শিক্ষার্থীরা একটু নাচানাচি করেছে, আনন্দ করেছে। তাতে সমস্যা কি? তবে জাতীয় একটি দিবসে বিদেশি গানের তালে এমন নাচকে শিক্ষক হিসেবে কিভাবে দেখছেন, প্রশ্ন করলে তিনি কোনও উত্তর দেননি। এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো. চুন্ন মিয়া বলেন, আমরা অনুষ্ঠানটি দুই পর্বে ভাগ করেছিলাম। নাচ গানের আয়োজন ছিল দ্বিতীয় পর্বে। প্রথম অংশে আলোচনা সভা, কেক কাটা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। পরে শিক্ষার্থীরা নাচ-গান করে। ভিডিও ভাইরালের কথা তুললে তিনি বলেন, আমি ওই সময়ে চলে এসেছিলাম। তবে শিক্ষার্থীদের এমন কাজে লজ্জিত বলে জানান তিনি।
ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, এমন আয়োজন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে অবমাননার শামিল। আমি ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি এবং ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরিচালনায় জড়িতদে শাস্তি দাবি করছি।
ফরিদপুর কবিতা আবৃত্তি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদুল ইসলাম তীব্র নিন্দা জানিয়ে এ ধরনের ঘটনা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য লজ্জার বলে মন্তব্য করেন।
মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবীণ সাংবাদিক আমিনুর রহমান ফরিদ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এমন ঘটনা কেন ঘটলো তা খতিয়ে দেখতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার বিষ্ণু পদ ঘোষাল বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যথাযথভাবে দিবসটি পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে এমন আয়োজন করা উচিত হয়নি। আমি এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবো।