রাজবাড়ীতে ‘বীর নিবাস’ পাচ্ছে ৬৪টি বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার। অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় জেলার পাঁচ উপজেলায় এসব ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। যেকোনও দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এসব ঘর হস্তান্তর করবেন বলে প্রকল্প পরিচালক স্বাক্ষরিত এক পত্রে জানানো হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সরাসরি তত্ত্বাবধানে অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় বীর নিবাসগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে।
ফরিদপুর অঞ্চলের ঢাকা বিভাগীয় উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. জসিম মোল্লা জানান, রাজবাড়ীর পাঁচ উপজেলার ৬৪টি ঘরের নির্মাণকাজ শেষ। এর মধ্যে পাংশা উপজেলায় প্রথম পর্যায়ে ১০টি, বালিয়াকান্দি উপজেলায় ৩০টি, রাজবাড়ী সদর উপজেলায় ৭টি, গোয়ালন্দ উপজেলায় ১০টি ও কালুখালি উপজেলায় ৭টি ঘরের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।
তিনি আরও জানান, শহীদ ও প্রয়াত এবং অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্ত্রী-সন্তানদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪ লাখ ১০ হাজার টাকা ব্যয়ে একেকটি পাকা ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। এরই অংশ হিসেবে জেলার ৬৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সরকারি এসব ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ২২ ফুট প্রস্থ আর ২৫ ফুট দৈর্ঘ্যের এই ঘরটিতে দুটি বেডরুম, একটি ড্রইং রুম, একটি ডাইনিং রুম, একটি কিচেন রুম ও দুটি বাথরুমসহ থাকছে সুপেয় পানির ব্যবস্থা।
ঠিকাদাররা বলছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে এসব ঘর নির্মাণ করতে গিয়ে তাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। তবু জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তারা ঘরগুলোর নির্মাণকাজ শেষ করছেন।
গোয়ালন্দ উপজেলা মুক্তিযুদ্ধো সংসদের সাবেক কমান্ডার আ. সামাদ মোল্লা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি আজ ক্ষমতায় আছে বলেই দেশে এতদিন ধরে ছড়িয়ে থাকা অবহেলিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধে বেশিরভাগ নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষ অংশগ্রহণ করেছিলেন। সরকার যে ঘরগুলো দিচ্ছে তা অবশ্যই ভালো কাজ। এতে করে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবেন এবং পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারবেন। আজ আমরা ভীষণ আনন্দিত, সকল মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আবু সাঈদ মন্ডল বলেন, ‘উপজেলায় ১০টি বীর নিবাসের কাজ শেষ হয়েছে। ডিজাইন মোতাবেক জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নিদের্শনায় অত্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের এই বীর নিবাসগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রথম পর্যায়ে ঘরের নির্মাণকাজ শেষে উদ্বোধনের জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে।’
সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এসএম মনোয়ার মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ভিশন বাস্তবায়নে সরকার সারা দেশে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। তারই অংশ হিসেবে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বীর নিবাস নির্মাণ করছে সরকার। জেলায় বীর নিবাসের কাজ সঠিকভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশনায় স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজগুলো বাস্তবায়ন হচ্ছে।’