রাজবাড়ীতে পুলিশের ওপর হামলা ও নাশকতার অভিযোগে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে জেলার সদর ও রেলওয়ে থানায় পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেছে।
জানা গেছে, শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) রাজবাড়ী সদর থানায় এসআই মোহাম্মাদ সোহেল রানা বাদী হয়ে করা মামলায় রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম ও রাজবাড়ী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাসিরুল হক সাবুসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বরত ১১৬ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত প্রায় ২২০০ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় পেনাল কোর্ড তৎসহ ১৯৯০ সনের বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩/৬ ধারাও যুক্ত করা হয়েছে।
অপরদিকে রাজবাড়ী রেলওয়ে (জিআরপি) থানার এসআই বিধান চন্দ্র মল্লিক বাদী হয়ে শনিবার জিআরপি থানায় ৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। রবিবার দুপুরে দুই মামলায় ২৮ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার দেখিয়ে রাজবাড়ী আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার দুপুরে রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম ও নাসিরুল হক সাবু গ্রুপ একটি আনন্দ শোভযাত্রা বের করেন। মাঝপথে কোর্ট চত্বর মোড়ের রাস্তার পাশে থাকা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ফেস্টুন ও ব্যানার-তোরণ ভাঙচুরের চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এতে সংঘর্ষ বাধে। এতে সদর থানা বিএনপির কমপক্ষে ২০ নেতাকর্মী ও পুলিশের তিন সদস্য আহত হন। এ সময় পুলিশ ১৫ রাউন্ড গ্যাস গান ও ৩৫ রাউন্ড শর্টগান দিয়ে গুলি করে বিএনপির নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ২৮ জনকে গ্রেফতার করে।
এ ঘটনার পর ছত্রভঙ্গ হওয়া বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজবাড়ী রেলস্টেশন এলাকায় প্রবেশ করে সেখানেও পুলিশের ওপর পাথর নিক্ষেপসহ রেলস্টেশন এলাকা ভাঙচুর করে। এতে রাজবাড়ী রেলওয়ে থানার ওসি সোমনাথ বসু ও দুই নারী পুলিশসহ চার জন আহত হন।
মামলা প্রসঙ্গে সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম দাবি করেন, পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে। আমরা এই হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
রাজবাড়ী রেলওয়ে থানার ওসি সোমনাথ বসু বলেন, আমাদের মামলায় রাজবাড়ী সদর থানা পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছে। তারা সদর থানার পুলিশের ওপর হামলা ঘটনায় মামলারও আসামি।
রাজবাড়ী সদর থানার ওসি শাহাদাত হোসেন বলেন, এসআই মোহাম্মাদ সোহেল রানার করা মামলার আসামি ২২০০ জন। এর মধ্যে ১১১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ওই মামলায় ২৮ জনকে গ্রেফতার করে রবিবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার জি এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, রাজনৈতিক স্বাধীনতার নামে পুলিশের ওপর হামলা করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।