নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, ‘বিএনপি নাকি গণতান্ত্রিক দল। কীসের গণতান্ত্রিক দল। ২০১৩, ১৪ ও ১৫ এই তিন বছরে ওরা ৩৩৩৬ জন মানুষকে আগুন দিয়েছে। পাঁচশ মানুষ আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে। আমি গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করবো আর মানুষকে পুড়িয়ে মেরে ফেলবো। এর নাম কি গণতন্ত্র? বিএনপি ক্ষমতার বায়ান্ন হাজার বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে নাই। আমি আপনাদের চ্যালেঞ্জ করে বলছি।’
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের বন্দর সমরক্ষেত্র এলাকায় এক প্রস্তুতিমূলক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় ওরা আমার মা-বোনের ইজ্জত নষ্ট করেছে। স্বাধীনতার এতো বছর পরে বিএনপির আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এখনও কীভাবে ওই জামায়াত-শিবির বাংলাদেশে কথা বলে, সাপের মতো ফণা তোলে। যারা শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছে একুশবার।’
বিএনপি-জামায়াতকে গোনায় ধরেন না উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, ‘অনেক মুক্তিযোদ্ধা একাত্তরের পরে লুণ্ঠন করেছে। আর আমরা পঁচাত্তরের পরে একবেলা ভাত খেয়েছি দুই বেলা খাই নাই। নারায়ণগঞ্জে অনেক নেতা-নেত্রী বড় বড় কথা বলেন, যাদের একসময় কিছুই ছিল না। তাদের এখন অনেক কিছু আছে। বিএনপি-জামায়াত এগুলো আমি গোনায় ধরি না। ওরা কিছু করতে পারবে না। ওরা তো বঙ্গবন্ধুর সময়ে কিছু করতে পারে নাই। এখন কী করবে।’
গরিব-মধ্যবিত্তরা বেইমানি করে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দুইশ বছর আমরা ব্রিটিশদের গোলামি করেছি। যখন দেখি কিছু আঁতেল শ্রেণির লোকজন টপটপ করে কথা বলে, তখন খুব অবাক লাগে। এই শ্রেণির লোকজন হচ্ছে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড় বদমাশ। এ দেশের গরিব-মধ্যবিত্ত মানুষ কখনও দেশের সাথে বেইমানি করে না। করে কারা? যারা বিপদে পড়লে জমি বেচে খায় দেশ বেচে খায়।’
নেতা নয় কর্মীর জায়গা পছন্দ করেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি নেতা না। আমি জীবনেও নেতা হতে চাই না। আমি ওই জায়গা (কর্মী) পছন্দ করি। ওই জায়গা যাদের থাকে তাদের স্বার্থ নাই। এদের ইচ্ছা হলো একটাই স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনা টিকে থাকুক। আর মঞ্চের এদিকে যারা আমরা থাকি তারা স্বার্থ চিন্তা করি। আমি কর্মী ছিলাম, কর্মী আছি, কর্মী থাকতে চাই।’
ঘণ্টা বাজানোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে একটা ওয়েকআপ কল দেওয়া। ঘুমিয়ে থাকা বাঙালিকে বলা, ঘুমিয়ে থাকা জনগণকে বলা, ঘুমিয়ে থাকা দেশপ্রেমিককে বলা। জাগো, তোমার দেশ এখন বিপদে আছে। তোমার দেশের স্বাধীনতাকে লুণ্ঠিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। পছন্দ আপনার, গোলামি করবেন পরাধীন থাকবেন নাকি দেশকে স্বাধীন দেখে মাথা উঁচু করে বাঁচবেন। ঘণ্টা বাজানোর সময় এসে গেছে। এখন ঘণ্টা বাজাতে হবে।’
সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহিদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বন্দর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ রশিদ, বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন প্রধানসহ আরও অনেকে।