রাজবাড়ীতে এক কলেজশিক্ষার্থীর পকেটে ইয়াবা ট্যাবলেট দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে বিনোদপুর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) আসিফ আহমেদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সোমবার (৯ অক্টোবর) রিফায়াত ইবনে রইস আরাফ (১৮) নামের ওই শিক্ষার্থী জেলা পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
আরাফ রাজবাড়ী সরকারি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। সে রাজবাড়ী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের নুরপুর এলাকার রইস উদ্দিন বাবুর ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রবিবার (৮ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটে শিক্ষা সফর শেষে আরাফের বড় ভাই শহরের মুরগির ফার্ম বাসস্ট্যান্ডে আসেন। পরে তাকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে নুরপুরের বাড়িতে চলে আসেন আরাফ। বাসায় এসে তার ভাই জানান, বাসস্ট্যান্ডে তার ল্যাপটপ ও ব্যাগ ফেলে এসেছেন। ফেলে আসা ল্যাপটপ ও ব্যাগ নিয়ে আরাফ মোটরসাইকেলযোগে বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসায় ফিরছিলেন। পথে রাজবাড়ী ইয়াসিন স্কুল সংলগ্ন ২ নম্বর রেলগেটে পুলিশ তার মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে।
এ সময় এসআই আসিফ আহমেদ, কনস্টেবল জাহাঙ্গীর এবং সুকান্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। একপর্যায়ে এসআই আসিফ আহমেদ আরাফের শার্টের কলার ধরে তাকে ‘ইয়াবা ব্যবসায়ী’ বলে সম্বোধন করে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন। পরে এসআই তার পকেটে কিছু ঢোকানোর চেষ্টা করেন। এতে ব্যর্থ হয়ে তাকে বাসায় ফোন করে টাকা আনতে বলেন। পরে তার পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে এবং সেখানে ক্যামেরা ও বিভিন্ন ব্যক্তিদের উপস্থিতির কারণে আরাফকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এরপর ভোর ৫টার দিকে পুলিশের পোশাক পরিহিত অবস্থায় এসআই আসিফ আহমেদ আরাফের বাড়িতে গিয়ে ঘটনার দায় স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং পরবর্তী কোনো পদক্ষেপ না নিতে অনুরোধ জানান। যদি তার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয় তাহলে তিনি তাকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেবেন বলেও হুমকি দেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত উপপরিদর্শক (এসআই) আসিফ আহমেদ বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘ওই দিন রাতে আমি ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় দায়িত্বরত ছিলাম। এ সময় কোনও কলেজছাত্রকে হয়রানি করা হয়নি।’
আরাফের মা রুবিনা বানু বলেন, ‘ঘটনার পর ভোর ৫টার দিকে এসআই আসিফসহ কয়েকজন কনস্টেবল পুলিশের পোশাক পরিহিত অবস্থায় আমাদের বাড়িতে আসে। এসআই আসিফ আমাদের কাছে ক্ষমা চায় এবং বিষয়টি গোপন রাখতে বলে।’
এ বিষয়ে রাজবাড়ী জেলা পুলিশ সুপার জি এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমি একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। সত্যতা মিললে ওই এসআইয়ের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’