X
রবিবার, ১১ মে ২০২৫
২৭ বৈশাখ ১৪৩২

বিচারের আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট 
১০ মে ২০২৫, ২৩:০৩আপডেট : ১০ মে ২০২৫, ২৩:২৪

সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

শনিবার (১০ মে) রাত ১১টার দিকে উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক শেষে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এ তথ্য জানান।

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, আজ শনিবার ১০ মে উপদেষ্টা পরিষদে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ সভায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনের সংশোধন অনুমোদিত হয়েছে। এতে করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কোনও রাজনৈতিক দল তার অঙ্গ সংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে পারবে। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচার কাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতা কর্মীদের নিরাপত্তা, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরিপত্র পরবর্তী কর্মদিবসে জারি করা হবে।

প্রসঙ্গত, ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পুরান ঢাকার রোজ গার্ডেনে "পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ" নামে প্রতিষ্ঠিত হয়। মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং শামসুল হক প্রমুখ সূচনালগ্নে এই দলের নেতৃত্ব দেন। পাকিস্তানের মধ্যে পূর্ব বাংলার স্বায়ত্তশাসন, অর্থনৈতিক ন্যায্যতা, এবং বাংলা ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এই দলটি গঠন করা হয়।

১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট গঠন করা হয়। আওয়ামী লীগ যুক্তফ্রন্টের অংশ হিসেবে প্রাদেশিক নির্বাচনে বিজয়ী হয়। ২১ দফা কর্মসূচির মধ্যে বাংলা ভাষার মর্যাদা ও স্বায়ত্তশাসন অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৫৭ সালে মাওলানা ভাসানী পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে মতবিরোধে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) গঠন করেন।
১৯৬৬ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পূর্ব পাকিস্তানের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে ছয় দফা আন্দোলন উত্থাপিত হয়।

 আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় (১৯৬৮) শেখ মুজিবসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে পাকিস্তান ভাঙার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়, কিন্তু গণআন্দোলনের চাপে মুক্তি পান।

১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে ১৬৯টির মধ্যে ১৬৭টি আসন লাভ করে। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানায়।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণ শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক ভাষণে "এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম" ঘোষণা দেন।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে প্রবাসী সরকার গঠিত হয় এবং ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। স্বাধীন দেশে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়।১৯৭৩ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী সরকার গঠন করে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর একটি অংশ শেখ মুজিব ও তার পরিবারকে হত্যা করে। পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হয়।
১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা প্রথম (বঙ্গবন্ধুর কন্যা) আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি সামরিক শাসন (জিয়া-এরশাদ আমল)-বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপির কাছে পরাজিত হলেও ১৯৯৬-এর জুনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরে। এরপর ২০০৯ থেকে টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতাসীন  ছিল আওয়ামী লীগ। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। 

/এসও/এমকেএইচ/আরআইজে/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
আজ শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা: আধ্যাত্মিক জাগরণের এক মহিমান্বিত দিন
আজ শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা: আধ্যাত্মিক জাগরণের এক মহিমান্বিত দিন
জুলাই ঘোষণাপত্র না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা
জুলাই ঘোষণাপত্র না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা
শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্না গ্রেফতার
শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্না গ্রেফতার
জাবির সব দরজা খোলা: আনচেলত্তি
জাবির সব দরজা খোলা: আনচেলত্তি
সর্বাধিক পঠিত
জরুরি বৈঠক ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা
জরুরি বৈঠক ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা
লঞ্চঘাটে তরুণীদের প্রকাশ্যে মারধর, যুবক বললেন ‘ভাই হিসেবে মেরেছি’
লঞ্চঘাটে তরুণীদের প্রকাশ্যে মারধর, যুবক বললেন ‘ভাই হিসেবে মেরেছি’
আ.লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনে বিরতি ঘোষণা, শাহবাগেই ঘুমিয়ে পড়েছেন হাসনাত
আ.লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনে বিরতি ঘোষণা, শাহবাগেই ঘুমিয়ে পড়েছেন হাসনাত
ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের সামরিক অভিযান শুরু
ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের সামরিক অভিযান শুরু
চট্টগ্রামে বিএনপির সমাবেশে তামিম ইকবাল, বললেন ‘আমি পলিটিক্যাল কেউ না, স্পোর্টসম্যান’
চট্টগ্রামে বিএনপির সমাবেশে তামিম ইকবাল, বললেন ‘আমি পলিটিক্যাল কেউ না, স্পোর্টসম্যান’