ফরিদপুর প্রেসক্লাবের বহিষ্কৃত সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেল (৪৯) ও তার সহযোগী রেজাউল করিম বিপুলকে (৩৮) অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের একটি মামলার দুটি ধারায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে এ রায় দেন ফরিদপুর জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) নওয়াব আলী।
পিপি বলেন, ‘আমরা আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রমাণ তুলে ধরায় তাদের বিরুদ্ধে দুটি ধারায় কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এই রায়ে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হবে। ক্ষমতার ছত্রছায়ায় থেকে অপরাধ করেও যে পার পাওয়া যায় না, এই রায়ে তাই প্রমাণিত হলো।’
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ১৮৭৮ সালের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯ (এ) ধারায় পিস্তল রাখার দায়ে দুজনকে ১০ বছর করে এবং গুলি রাখায় একই আইনের ১৯ (এফ) ধারায় সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেন বিচারক। আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আসামিরা দুটি ধারার সাজা একসঙ্গে ভোগ করবেন।
বিতর্কিত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে আলোচিত দুই ভাই শহর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ফরিদপুর প্রেসক্লাবের বহিষ্কৃত সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেল। তারা ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশারফ হোসেনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামলার মামলায় ২০২০ সালের জুনে দুই ভাই গ্রেফতার হন। ওই সময়ে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই ভাই ও তাদের সহযোগী রেজাউল ইসলামসহ মোট ৯ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ওই সময় অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনে সাজ্জাদ হোসেন, ইমতিয়াজ হাসান ও রেজাউলের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়। এর মধ্যে একটি অস্ত্র মামলার আসামি সাজ্জাদ হোসেন ও ইমতিয়াজ হাসান। অপর অস্ত্র মামলায় আসামি হলেন ইমতিয়াজ হাসান ও তার সহযোগী রেজাউল করিম। দুটি মামলা ছাড়াও মানি লন্ডারিংসহ বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধে মোট ১১টি মামলা করা হয়। ২০২০ সালের ৭ জুন দিবাগত রাতে ফরিদপুর শহরের শ্রী অঙ্গন মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড এলাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ একটি পিস্তল ও দুটি গুলিসহ রেজাউল করিমকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল জব্বার বাদী হয়ে রেজাউল করিমকে আসামি করে অস্ত্র আইনে একটি মামলা করেন। পরে এই মামলায় আসামি ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে ইমতিয়াজ হাসানের নাম উল্লেখ করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) ফরহাদ হাসান তদন্ত করে রেজাউল করিম ও ইমতিয়াজ হাসানকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে ইমতিয়াজ হাসান আগে থেকেই কারাগারে ছিলেন। রেজাউল করিম জামিনে ছিলেন। রায় ঘোষণা শেষে দুজনকে কারাগারে নিয়ে যায় পুলিশ।
