টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ফলদা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড কৃষক দলের সভাপতি পদে প্রার্থী হওয়াকে কেন্দ্র করে এক যুবদল নেতার মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ওই ওয়ার্ডে কৃষক দলের সভাপতি প্রার্থী আরিফুল ইসলাম ও তার লোকজন ঘটনাটি ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন দলের নেতাকর্মী ও ভুক্তভোগী যুবদল নেতা। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে ফলদা ইউনিয়নের মাইজবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একে-অপরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
আহত আব্দুল আলিম ফলদা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ও মাইজবাড়ি গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে। অভিযুক্ত আরিফুল ইসলাম একই গ্রামের আনসার আলীর ছেলে এবং ওই ওয়ার্ডে কৃষক দলের সভাপতি প্রার্থী।
আহত আব্দুল আলিম বলেন, ‘মঙ্গলবার বিকালে ওয়ার্ড কৃষক দলের কমিটি হওয়ার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে সভাপতি প্রার্থী সফিকুল ইসলাম, মো. ইব্রাহীম ও আরিফুল ইসলামসহ তিন জন। কমিটি ও সভাপতির পদ নিয়ে এলাকায় আলোচনা চলছিল। কমিটি গঠন নিয়ে সকালে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলি। এ সময় নেতাকর্মীদের আহ্বান জানানো হয়, যারা আওয়ামী লীগের দালালি করেছে, তাদের যাতে দলের কোনও পদে না রাখা হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওয়ার্ড কৃষক দলের সভাপতি প্রার্থী আরিফুল ইসলাম তার অনুসারীদের নিয়ে আমার ওপর হামলা করেন। সেইসঙ্গে মাথা ফাটিয়ে দেন। স্থানীয়রা উদ্ধার করে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।’
অভিযোগের বিষয়ে আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘বিকালে কমিটি গঠনের কথা ছিল। এর আগে স্থানীয় নেতাকর্মীরা আমাকে কৃষক দলের সভাপতি পদে প্রার্থী হতে সম্মতি দিয়েছেন। কিন্তু আব্দুল আলিম সেটি চাননি। তিনি আমার সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা বলে বাড়িঘর ভেঙে এলাকা থেকে বিতাড়িত করার হুমকি দেন। একপর্যায়ে আলিম মোটরসাইকেল থেকে নেমে আমার ওপর হামলা করেন। প্রাণ রক্ষার্থে আমিও হাতে থাকা মোবাইল দিয়ে তার মাথায় আঘাত করি। এরপর আলিমের লোকজন আমার বাড়িতে হামলা চালান। বাড়ির গেট, দরজা ভাঙচুর ও আমার স্ত্রীকে মারধর করেছেন। আমিও থানায় অভিযোগ দিয়েছি।’
ফলদা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি ইসহাক সরকার বলেন, ‘কৃষক দলের সভাপতি প্রার্থী আরিফুল ইসলাম আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। এখন কৃষক দলের সভাপতির পদ চান তিনি। মূলত এ নিয়েই বিরোধের সূত্রপাত।’
উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক নাজিমুল ইসলাম বলেন, ‘তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে ঘটনাটি ঘটেছে। দুজনই দলের কর্মী। দুই পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসে এর সমাধান করা হবে। ঘটনার পর নির্ধারিত কমিটি গঠনের তারিখ পেছানো হয়েছে। পরবর্তী সময়ে তারিখ নির্ধারণ করে জানিয়ে দেওয়া হবে।’
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলু বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। কিন্তু এখনও বিস্তারিত জানতে পারিনি। আমরা দুই পক্ষ নিয়ে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করবো।’
ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এ ঘটনায় দুই পক্ষই থানায় অভিযোগ দিয়েছে। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’