মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার পর্দা নেমেছে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি)। শুক্রবার বিকাল ৫ টায় অন্তবর্তীকালীন সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন আহমেদ সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে মেলায় থাকা বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে উদ্যোক্তাদের মাঝে পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে মেলার ইতি টানেন।
গত ১ জানুয়ারি মেলা উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মাসব্যাপী মেলার ৩১তম দিন শুক্রবার হওয়ায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড়ে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল। শেষ মুহূর্তে ছিল কেনাকাটার ধুম।
বাণিজ্য মেলায় মূল প্যাভিলিয়নের হলরুমে আয়োজিত সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ইপিবি ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, মেলার পরিচালক ও ইপিবি সচিব বিবেক সরকার, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাভিদ সফিউল্লাসহ ২৫৬ ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, ইপিবি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
মেলার শেষ দিনে দুপুরে তুচ্ছ ঘটনায় ইগলু আইসক্রিম স্টলের বিক্রয়কর্মী ও মেলার প্রবেশদ্বার ঠিকাদার নিয়োজিত কর্মীদের মাঝে মারামারির ঘটনায় সেখানে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়। এ ঘটনায় সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে বাধার সম্মুখীন হন। পরে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। তখন দিগ্বিদিক ছুটতে থাকেন মেলায় আগতরা। ঈগলু আইসক্রিম স্টলের কর্মচারীদের হামলায় যমুনা টিভির রূপগঞ্জ প্রতিনিধি জয়নাল আবেদীন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
মেলা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৫ সাল থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা বসছে। দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন ও উৎপাদনে সহায়তার জন্য এ মেলার আয়োজন করা হয়। আগে বাণিজ্য মেলা রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের পাশের খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হতো। ২০২২ সাল থেকে পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার প্রাঙ্গণ মেলার জন্য নির্ধারিত হয়েছে।
এবারের বাণিজ্য মেলায় বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, হংকং, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, নেপালসহ বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন। মেলায় ৯টি বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। এ ছাড়াও দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য দুটি হলের বাইরে মিলে মোট ৩৬১টি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়ন অংশ নিয়েছে।
মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২২টি প্রতিষ্ঠানকে প্রথম পুরস্কার, ১৬টি প্রতিষ্ঠানকে দ্বিতীয় পুরস্কার ও ১৩টি প্রতিষ্ঠানকে তৃতীয় পুরস্কারে দেওয়া হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দুপুরের পর থেকে রাজধানী ঢাকাসহ এর আশপাশ এলাকা থেকে মেলা প্রাঙ্গণে মানুষের সমাগম ঘটতে থাকে। বিকাল শেষে সন্ধ্যায় দর্শনার্থীদের ভিড় রূপ নেয় জনসমুদ্রে। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কেই শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে।