গাজীপুরের শ্রীপুরে সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতির সময় ডাকাতের দায়ের কোপে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক এবং গ্রামবাসীর গণপিটুনিতে এক ডাকাত নিহত হয়েছে। এ সময় এলাকাবাসী চার ডাকাতকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দিবাগত রাত ১টায় এমসি বাজার-বরমী সড়কের সাতখামাইর এলাকার গজারি বনের ভেতর ডাকাতির ঘটন ঘটে। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুল বারিক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন- উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ী গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে অটোরিকশাচালক আবুল কালাম (৪০) এবং নিহত ডাকাত আরিফ হোসেন (৩০)। তাদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ডাকাতির ঘটনায় অটোরিকশাযাত্রী শফিকুল ইসলাম (৩৬) বাদী হয়ে রাতেই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
খবর পেয়ে সকালে গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিহত অটোরিকশাচালকের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন।
আটক ডাকাত সদস্যরা হলো- শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেংরা (কাইচ্চামোড়) গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে শাকিল (২৫), শাহিনের ছেলে রিপন মিয়া (১৯), শাজাহানের ছেলে তাহসিন মিয়া (১৮), গোসিঙ্গা ইউনিয়নের পটকা গ্রামের রমজান আলীর ছেলে আবুল কালাম (২৭)। এ সময় তাদের আরও ৭ জন সহযোগী ডাকাত দৌড়ে পালিয়ে যায়।
অটোরিকশাযাত্রী শফিকুল ইসলাম থানায় দেওয়া লিখিত এজাহারে উল্লেখ করেন, তিনিসহ তার তিন সহযোগী এমসি বাজার থেকে অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে বরমী যাচ্ছিলেন স-মিলের কাঠের ভুসি আনার জন্য। রাত ১টার দিকে এমসি বাজার-বরমী সড়কের সাতখামাইর এলাকার গজারি বনের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় সড়কে গাছ পড়ে থাকতে দেখে তাদের অটোরিকশা থামায়। এ সময় পাশে থাকা ডাকাতরা তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। পরে ভয় দেখিয়ে তাদের প্রত্যেকের সঙ্গে থাকা নগদ টাকা এবং মোবাইল ফোন লুটে নেয়। ডাকাতরা সড়কে চলাচলকারী অন্যান্য গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের একই কায়দায় জিম্মি করে তাদের সঙ্গে থাকা মালামাল লুটে নিচ্ছিল। এ সময় তাদের বাধা দেওয়ায় ডাকাতের দায়ের এলোপাতাড়ি কোপে অটোরিকশাচালক আবুল কালাম গুরুতর আহত হয়। তাদের চিৎকার গ্রামবাসী ঘটনাস্থলে পৌঁছে ডাকাত আরিফ হোসেনকে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে গ্রামবাসী আহত ডাকাত আরিফ হোসেনসহ তার চার সহযোগীকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক শারমিন সুলতানা বলেন, ‘পুলিশ একজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে এবং অটোরিকশাচালক আবুল কালামকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নিয়ে আসে। গুরুতর আহত আবুল কালামকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। পরে তার স্বজনরা তাকে ঢাকা নেওয়ার পথে শ্রীপুর পৌরসভার মাস্টারবাড়ী এলাকায় তার মৃত্যু হয়।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুল বারিক জানান, গুরুতর আহত অটোরিকশাচালক আবুল কালাম এবং জখমপ্রাপ্ত ডাকাত আরিফ হোসেনকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আহত ডাকাতকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।