মাদারীপুরের রাজৈরে ইতালি প্রবাসী হালিম খানকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তার দ্বিতীয় শ্বশুরের বসতবাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধরা। বুধবার (২৫ জুন) বেলা ১১টার দিকে রাজৈর উপজেলার বদরপাশা ইউনিয়নের দারাদিয়া গ্রামের সোমেদ চৌকিদারের বসতবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (২৩ জুন) রাতে সোমেদ চৌকিদারের বাড়িতে তার মেয়ে রেশমা বেগমের স্বামী ইতালি প্রবাসী হালিম খানকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরে লাশ রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেখে পালিয়ে যান শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এই ঘটনার জেরে বিক্ষুব্ধরা হালিম খানের দ্বিতীয় শ্বশুরবাড়ি আগুন ধরিয়ে দেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগে বসতঘর ও রান্নাঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
মাদারীপুরের রাজৈর থানার ওসি মোহাম্মদ মাসুদ খান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। ইতালি প্রবাসীকে হত্যার ঘটনার জেরে এই ঘটনা ঘটে। প্রবাসীকে হত্যায় মামলা করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনও আসামিকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। এদিকে আর কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা যেন না ঘটে, সে বিষয়ে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
প্রসঙ্গত, মাদারীপুরের রাজৈরের ইশিবপুর ইউনিয়নের গোয়ালদি গ্রামের কলম খানের ছেলে ইতালি প্রবাসী হালিম খানের সঙ্গে ২০১৮ সালে মোবাইলে প্রেমের সম্পর্ক হয় পাশের দারাদিয়া গ্রামের ছোমেদ চোকদারের মেয়ে রেশমা আক্তারের। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে তাদের বিয়েও হয়। এরপর ইতালি চলে যান হালিম। সেখানে গিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নামে টাকা পাঠান। সেই টাকা দিয়ে শ্যালক সবুজ চোকদার একটি মোটরসাইকেল কেনেন। তিন মাস আগে ছুটিতে দেশে আসেন হালিম। পরে মোটরসাইকেল কেনা টাকা ফেরত চান। এ নিয়ে শুরু হয় শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে বিরোধ। সবশেষ সোমবার রাতে বাড়ি থেকে হালিমকে শ্বশুরবাড়ি ডেকে নিয়ে যায় শ্যালক সবুজ।
পরে রাতেই হালিমকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি ভিন্নখাতে নিতে হালিমের লাশ রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফেলে রেখে যান শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরে নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
স্বজনরা জানান, ২০০৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পারিবারিকভাবে নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকার আলি হায়দারের মেয়ে জবেদা সুলতানাকে বিয়ে করেন ইতালি প্রবাসী হালিম। পরে পারিবারিক বিরোধে ২০১৮ সালের জুনে দুই জনের বিচ্ছেদ হয়। নিহত হালিমের প্রথম ঘরে ১৩ বছরের মেয়ে ও ৭ বছরের ছেলে রয়েছে।