সাতক্ষীরার শ্যামনগরে বিয়ের কথা বলে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ ও ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকির অভিযোগে শহীদুল ইসলাম আবীর নামে এক ইউপি সদস্যকে (মেম্বার) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে সোমবার রাতে উপজেলার পশ্চিম পোড়াকাটলা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। শহীদুল ইসলাম (৫০) উপজেলার পশ্চিম পোড়াকাটলা গ্রামের শফিকুল ইসলাম সরদারের ছেলে ও বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য। এ ঘটনায় সোমবার বিকালে শ্যামনগর থানায় মামলা করেছেন স্কুলছাত্রীর নানি।
স্কুলছাত্রীর নানা জানান, পাঁচ বছর আগে তার মেয়ের সঙ্গে স্বামীর তালাক হয়ে যায়। তাদের ঘরে এক মেয়েসন্তান আছে। তালাকের পর তার মেয়ে ভারতে কাজ করতে গিয়ে সেখানে বিয়ে করেন। তার স্বামীও অন্যত্র বিয়ে করেন। সে কারণে নাতনিকে তার কাছে রেখে স্থানীয় স্কুলে ভর্তি করে দেন। বর্তমানে সে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। তার বাড়িতে যাতায়াতের সুযোগে নাতনিকে বিয়ের কথা বলে গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর রাতে ধর্ষণ করে ইউপি সদস্য শহীদুল। গোপনে ধর্ষণের ভিডিও করে দাঁতিনাখালি গ্রামের হাসানুল ইসলাম ওরফে সামছুদ্দিন। পরে ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে নাতনিকে প্রায়ই ধর্ষণ করতো শহীদুল। এতে নাতনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। পরে নাতনিকে সদরের একটি ক্লিনিকে নিয়ে গর্ভপাত ঘটায়। বিষয়টি জানতে পেরে শহীদুলের কাছে নাতনির বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত বিয়ে করেনি। বাধ্য হয়ে থানায় মামলা করেছেন স্কুলছাত্রীর নানি।
শ্যামনগর থানার ওসি নুরুল ইসলাম বাদল বলেন, ‘ধর্ষণ ও ধর্ষণের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে স্কুলছাত্রীর নানি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেছেন। মামলায় ইউপি সদস্য শহীদুল ইসলাম, হাসানুল ও আবু নাঈমকে আসামি হয়েছে। সোমবার রাতে ইউপি সদস্য শহীদুল ইসলামকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার দুপুরে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
শহীদুল ইসলামের কাছ থেকে ওই ভিডিওসহ তার মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে উল্লেখ করে ওসি বলেন, ‘সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে স্কুলছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। পরে সাতক্ষীরা আদালতের বিচারক বন্যা খাতুনের কাছে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে স্কুলছাত্রী।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শ্যামনগর থানার এস আই মো. শাখায়েতুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।’