প্রতীক বরাদ্দের পরদিন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন সাতক্ষীরা-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে ১৪ দলের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে গণমাধ্যমে প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে বিষয়টি জানিয়েছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুস্তফা লুৎফুল্লাহ নিজেই। সোমবার দুপুরে তাকে হাতুড়ি প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছিলেন জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘সমঝোতার ভিত্তিতে ১৪-দলীয় জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু মৌখিকভাবে জানিয়েছিলেন যে ওয়ার্কার্স পার্টির বর্তমান তিন সংসদ সদস্য—রাশেদ খান মেনন, ফজলে হোসেন বাদশা ও মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এবারও জোটের মনোনয়ন পাচ্ছেন। কিন্তু এর মধ্যে লুৎফুল্লাহকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় আওয়ামী লীগ। সেজন্য মুস্তফা লুৎফুল্লাহর নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে বিরত রাখছে ওয়ার্কার্স পার্টি।’
এ বিষয়ে মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেন, ‘১৪ দলকে সাতটি আসনে ছাড় দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সাতক্ষীরা-১ আসন সেই সাতটি আসনের মধ্যে ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তারা সিদ্ধান্ত বদলে ছয়টি আসন দিয়েছে। সাতক্ষীরা-১ আসন আমাদের দেয়নি। তাই আমি নির্বাচনে যাচ্ছি না।’
একই দিন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন এই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুজিবুর রহমান। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। মঙ্গলবার সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে এই প্রার্থী বলেন, ‘দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও দলের প্রতি সম্মান দেখিয়ে নির্বাচন করছি না।’ এর আগে সোমবার দুপুরে তাকে কাঁচি প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছিলেন জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সোমবার এই আসনে ১০ প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা। তারা হলেন—আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফিরোজ আহম্মেদ (নৌকা), ওয়ার্কার্স পার্টির মুস্তফা লুৎফুল্লাহ (হাতুড়ি), বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. ইয়ারুল ইসলাম (ডাব), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের শেখ মো. আলমগীর (ছড়ি), তৃণমূল বিএনপির সুমি আক্তার (সোনালী আঁশ), জাতীয় পার্টির সৈয়দ দিদার বখত (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র মুজিবুর রহমান (কাঁচি), নুরুল ইসলাম (ট্রাক), মুজিবর রহমান (দোলনা) এবং নুরুল ইসলাম (ঈগল)। এর মধ্যে মুস্তফা লুৎফুল্লাহ ও মুজিবুর রহমান সরে দাঁড়িয়েছেন।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, ‘আমার নির্বাচনি এলাকা তালা-কলারোয়ায় নৌকার গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বিজয় সুনিশ্চিত। শেখ হাসিনার উন্নয়নের কারণে নৌকায় ভোট দেবে মানুষ।’
এই আসনে ট্রাক প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়েছি। তালা-কলারোয়ার অলিগলির মানুষ আমাকে চেনে, আমি তাদের চিনি। এবার তারা আমাকেই ভোট দিয়ে জয়ী করবে।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দোলনা প্রতীকে নির্বাচন করছেন কেন্দ্রীয় সৈনিক লীগের সহসভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক মুজিবর রহমান। তিনি বলেন, ‘যেহেতু স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোট করছি সেহেতু মাঠের বর্তমান চিত্র কী, তা জানি। এখানের মানুষ নতুন নেতৃত্ব চায়, সে হিসেবে আমি জয়ী হবো।’
এই আসনে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করছেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ দিদার বখত। তালা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘দিদার বখত তালা ও কলারোয়ার উন্নয়নের রূপকার। তিনি সবার কল্যাণে কাজ করেছেন। সুষ্ঠু ভোট হলে তিনি জয়ী হবেন।’