X
শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫
২০ আষাঢ় ১৪৩২

আসনবিহীন টিকিট বিক্রি বন্ধ, তবু ট্রেনে অতিরিক্ত যাত্রী

বিশ্বজিৎ দেব, জামালপুর
২৭ নভেম্বর ২০২১, ১৬:১৪আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২১, ১৬:৩৪

জরুরি কাজে রাজধানী ঢাকায় যেতেই হবে, কিন্তু কাউন্টারে কোনও টিকিট নেই। আসনবিহীন (স্ট্যান্ডিং) টিকিট বিক্রিও বন্ধ। এতে অনেকটা বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে বিনা টিকিটে রেল ভ্রমণ করছি। ট্রেনের টিকিট কালেক্টটর অথবা রেল পুলিশকে ম্যানেজ করে কমলাপুর স্টেশনে নেমে যাবো। এভাবেই বিনা টিকিটে রেল ভ্রমণের কথা বলছিলেন দেওয়ানগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী আন্তনগর ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেসের যাত্রী আকবর আলী। 

জানা যায়, করোনা মহামারি প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে সরকার ট্রেনে আসনবিহীন টিকিট বিক্রি বন্ধ রেখেছে। তবে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় ট্রেনে ফের বেড়েছে যাত্রীর চাপ। এ অবস্থায় স্ট্যান্ডিং টিকিট না দেওয়ায়, বিনা পয়সায় রেল ভ্রমণ করছেন যাত্রীরা। এতে রেলের অসাধু কিছু কর্মচারীদের পকেট ভরলেও রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। 

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-সরিষাবাড়ি, ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ রেলপথে প্রতিদিন আন্তনগর তিস্তা,  ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, অগ্নিবীণা, জামালপুর এক্সপ্রেস ছাড়াও বেসরকারি দুই জোড়া কমিউটার ট্রেন চলাচল করে। এসব ট্রেনের শতকরা ৫০ ভাগ টিকিট যাত্রার নির্ধারিত তারিখের পাঁচ দিন আগেই বিক্রি শুরু হয়। যাত্রার দিন কাউন্টারে কোনও টিকিট পাওয়া যায় না। তাই একরকম বাধ্য হয়েই বিনা টিকিটে ভ্রমণ করছেন যাত্রীরা। 

অপরদিকে করোনা প্রতিরোধে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ যাত্রার পাঁচ দিন আগে ৫০ শতাংশ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করছে। এতে যাত্রাবিরতির প্রতিটি স্থানে একশ্রেণির সংঘবদ্ধ টিকিট কালোবাজারি প্রতিনিয়ত অনলাইনে টিকিট কেটে মজুত করে। পরে যাত্রীদের কাছে টিকিটের মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ মূল্যে বিক্রি করছে।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, আসনবিহীন টিকিট বিক্রি বন্ধ থাকলেও যাত্রীদের ভ্রমণ বন্ধ নেই। বরং আন্তনগর ট্রেনগুলোতে কর্তব্যরত টিকিট চেকার, নিরাপত্তা কর্মী ও পুলিশসহ অ্যাটেন্ডেন্টদের ম্যানেজ করে যাত্রীরা প্রতিনিয়ত ট্রেনে ভ্রমণ করছেন। এতে ট্রেনে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে গৃহীত পদক্ষেপ ভেস্তে গেছে। পাশাপাশি সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয়।

আন্তনগর তিস্তা এক্সপ্রেসের যাত্রী মাদারগঞ্জ উপজেলার চরপাকেরদহ বাসিন্দা মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে অনুরোধ করেও কাউন্টার থেকে টিকিট পাইনি। কিন্তু ট্রেনে উঠে দেখি নির্ধারিত আসনের বিপরীতে অতিরিক্ত যাত্রী গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে বিনা টিকিটে ভ্রমণ করছেন। 

জামালপুরের মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, করোনা রোধে সরকার সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে ট্রেনে আসনবিহীন টিকিট বিক্রি বন্ধ করা হয়। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসায় যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে। তবে আসনবিহীন স্ট্যাডিং টিকিট না দেওয়ায় যাত্রীদের অনেকেই বিনা টিকিটে ভ্রমণ করছেন। এতে করোনা রোধে সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি উপেক্ষিত হচ্ছে। আর সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয়।

জামালপুর রেলওয়ে স্টেশনের বুকিং ইনচার্জ মো. গোলাম মোর্তজা বলেন, করোনা মহামারি শুরুর আগে টিকিট কাউন্টার থেকে প্রতিদিনই গড়ে তিন লাখ টাকার টিকিট বিক্রি হতো। বর্তমানে আসনবিহীন টিকিট বন্ধ থাকায় বিক্রি অর্ধেকে নেমে এসেছে।

জামালপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মো. আছাদ উজ জামান বলেন, আসনবিহীন টিকিট বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত সরকারের। তাই প্রতিদিন রেলের লোকসান হলেও আমাদের কিছু করার নেই। নতুন করে সিদ্ধান্ত এলে আসনবিহীন টিকিট বিক্রি শুরু হবে। 

জামালপুর রেলওয়ে থানার ওসি মো. গোলজার হোসেন দাবি করেন, বিনা টিকিটে কোনও যাত্রী যেন রেলে ভ্রমণ করতে না পারে, সেদিকে আমাদের বিশেষ নজরদারি রয়েছে।

 

 

/টিটি/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
১৩ ছাত্রীকে যৌন হয়রানি: অভিযুক্ত শিক্ষককে বাঁচাতে মরিয়া সহকর্মীরা
১৩ ছাত্রীকে যৌন হয়রানি: অভিযুক্ত শিক্ষককে বাঁচাতে মরিয়া সহকর্মীরা
ফিরে দেখা: ৪ জুলাই ২০২৪
ফিরে দেখা: ৪ জুলাই ২০২৪
গ্রেনাডাতেও ওয়েবস্টার-ক্যারির ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ালো অস্ট্রেলিয়া
গ্রেনাডাতেও ওয়েবস্টার-ক্যারির ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ালো অস্ট্রেলিয়া
টিভিতে আজকের খেলা (৪ জুলাই, ২০২৫)
টিভিতে আজকের খেলা (৪ জুলাই, ২০২৫)
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের দ্বিতীয় সংশোধন উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের দ্বিতীয় সংশোধন উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন
মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ মাকে পিটিয়ে হত্যা
মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ মাকে পিটিয়ে হত্যা
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
এনবিআর নিয়ে ‘কঠোর’ সরকার, আতঙ্কে শীর্ষ কর্মকর্তারা
প্রশ্নপত্রে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির গল্প, পরীক্ষা বাতিল
প্রশ্নপত্রে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির গল্প, পরীক্ষা বাতিল
সচিবালয়ে দখলের দ্বন্দ্ব : আন্দোলনের নেতৃত্বে বিভক্তি
সচিবালয়ে দখলের দ্বন্দ্ব : আন্দোলনের নেতৃত্বে বিভক্তি