জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার যমুনা সার কারখানা থেকে ৩০ কোটি টাকার সার আত্মসাতের অভিযোগে তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করেছে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি)।
বরখাস্ত তিন কর্মকর্তা হলেন সার কারখানার বিক্রয় শাখার ব্যবস্থাপক ওয়ায়েছুর রহমান, জেএফসিএলের সাবেক মহা-ব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) খোকন চন্দ্র দাস এবং ব্যাগিং শাখার প্রধান রসায়নবিদ নজরুল ইসলাম।
গত ১৮ নভেম্বর বিসিআইসি চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) শাহ মো. এমদাদুল হক স্বাক্ষরিত পত্রে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০২ ডিসেম্বর) সার কারখানার বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুদীপ মজুমদার ওই তিন কর্মকর্তার বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শাহ মো. এমদাদুল হক স্বাক্ষরিত বরখাস্ত পত্রে উল্লেখ করা হয়, ২০১২ সাল থেকে যমুনা সার কারখানায় বিক্রয় শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ওয়ায়েছুর রহমান। উৎপাদিত সারের গুদাম-১ ও আমদানি সারের গুদাম-২-সহ বিভিন্ন স্থানে রক্ষিত সারের ব্যাগ রক্ষণাবেক্ষণ ও বিতরণের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে কারখানায় উৎপাদিত সারের মজুতের হিসাবে ২০ হাজার টনের গরমিলের অভিযোগ পাওয়া যায়। এসব সারের মূল্য ৩০ কোটি ২৬ লাখ ৬৩৬ টাকা। এ ঘটনায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিসিআইসি।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে সরেজমিনে তদন্তকাজ শুরু করে কমিটি। তদন্ত চলাকালে কারখানার গুদামে রক্ষিত উৎপাদিত সারের ব্যাগ ও বাল্ক স্টোরে লুজ সারের পরিমাপ করা হয়। পরিমাপ শেষে ১৯ হাজার ১৩৩ দশমিক ১৩ টন সার পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় কারখানার বিক্রয় শাখার প্রধান ওয়ায়েছুর রহমানকে প্রায় ২০ হাজার টন সার আত্মসাতের দায়ে অভিযুক্ত করে তদন্ত কমিটি। সেই সঙ্গে ওয়ায়েছুর রহমানের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটিকে অসহযোগিতা ও অসদাচরণের অভিযোগ আনা হয়।
পত্রে উল্লেখ করা হয়, বিক্রয় শাখার প্রধান ওয়ায়েছুর রহমান ওই দুই কর্মকর্তার যোগসাজশে সারগুলো আত্মসাৎ করেছেন। এ জন্য বরখাস্ত করে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ওয়ায়েছুর রহমান বলেন, কারখানা থেকে সার আত্মসাতের সুযোগ নেই। কারখানার গোডাউন না থাকায় বিভিন্ন সময়ে রোদ-বৃষ্টিতে বিপুল পরিমাণ সার নষ্ট হয়েছে। এ জন্য প্রকৃত হিসাবে গরমিল দেখা দিয়েছে। যথাসময়ে আমি কর্তৃপক্ষের কাছে বক্তব্য উপস্থাপন করবো।
সুদীপ মজুমদার বলেন, তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এখনও তদন্ত চলছে। পুরো ঘটনা তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানাবো।