ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় ব্রিজ ধসে দুই পাড়ের প্রায় অর্ধ লাখ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। মুক্তাগাছার আইমন নদী খননের ফলে পানি-প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় ভেঙে গেছে ব্রিজ। এতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ১৫ গ্রামের মানুষ।
টানা বর্ষণে দুই পাশের মাটি সরে গিয়ে শুক্রবার (৩০ মে) বিকালে ব্রিজটি পাকা সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ভেঙে পড়ে। এতে মুক্তাগাছা উপজেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে কমপক্ষে ১৫ গ্রামের অর্ধ লাখ মানুষের।
পলসা গ্রামের বাসিন্দা কামাল হোসেন জানান, আইমন নদী খনন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। দীর্ঘ দুই দিন ধরে টানা বৃষ্টি হওয়ায় নদীতে পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বৃদ্ধি অনেক বেশি পাওয়ায় খেরুয়াজানী ইউনিয়নের পলশা গ্রামে একটি সেতুর দুপাশ থেকে মাটি সরে যেতে শুরু করে। শুক্রবারের বিকালের দিকে একপর্যায়ে সেতুটি ভেঙে পড়ে।
ময়মনসিংহের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ থেকে জানা গেছে, ২০০১ সালে ১০ মিটার দীর্ঘ ও ১২ ফুট প্রস্তের বক্স ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছিল।
এসব বিষয়ে মুক্তাগাছা উপজেলা প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, ময়মনসিংহ পানি উন্নয়ন (বোর্ড) আইমন নদীটি খনন করেছে। খননের ফলে বক্স ব্রিজের নিচ থেকে মাটি সরে যায়। সে কারণেই সেতুটি ভেঙে পড়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী খনন কাজ শুরু করলেও ব্রিজ রক্ষায় কোনও ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। ফলে সেতুর গোড়ার মাটি সরে গিয়ে সেতুটি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে পানির প্রবল স্রোতে সেতুটি ভেঙে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা বাদল মিয়া জানান, অপরিকল্পিত নদী খননের কারণেই ব্রিজটি ধসে পড়েছে। রামভদ্রপুর, বানিয়াকাজী, শিবপুর, কবীরপুর, ইটচকিসহ কমপক্ষে ১৫টি গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ চলাচল করে। কিন্তু সেতুটি ভেঙে পড়ায় গ্রামগুলোর মানুষ মুক্তাগাছা উপজেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ময়মনসিংহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আখলাক উল জামিল জানান, আইমন নদী খননের আগেই এর ওপরে নির্মাণাধীন ব্রিজগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে এমন বিষয় অবহিত করে স্থানীয় প্রশাসনসহ এলজিইডিকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তারা কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণেই ব্রিজ ধসে পড়েছে।
এসব বিষয়ে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম জানান, সাধারণ মানুষের চলাচল স্বাভাবিক রাখতে দ্রুত সেখানে বিকল্প ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। তবে ব্রিজ নতুন করে নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।