সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে হত্যাচেষ্টার উদ্দেশ্যে নৃংশসভাবে কোপানোর ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে সিলেট নগরী। বৃহস্পতিবার সকালে শহরের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন সিলেট মহিলা কলেজের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী, এমসি কলেজের শিক্ষার্থীসহ নার্গিসের গ্রামের অধিবাসীরা।
জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপিও পাঠান বিক্ষোভকারীরা।
বিক্ষোভ আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় নার্গিসের নিজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন তার সহপাঠীরা। কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীরাও এতে যোগ দেন। এসময় জিন্দাবাজার-আম্বরখানা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা।
বিক্ষোভ মিছিল থেকে ‘বদরুলের ফাঁসি চাই’, ‘অন্যায় হবে যেখানে- লড়াই হবে সেখানে’, ‘নারী নির্যাতন যেখানে- লড়াই হবে সেখানে’ সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেওয়া হয়। এছাড়া ‘তনু- খাদিজা- আফসানা, নিরাপত্তার নমুনা?’ লেখা প্ল্যাকার্ডও মিছিলে বহন করতে দেখা যায়।
খাদিজার কলেজ ক্যাম্পাসে প্রতিদিনই বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন উল্লেখ করে মহিলা কলেজের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র ফজিলাতুন্নেছা বলেন, ‘আমরা হামলাকারীর দ্রুত বিচার দেখতে চাই। সেই সঙ্গে সব শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা চাই।’
পরে সকাল ১১টায় চার দফা দাবিতে সিলেট জেলা প্রসাশকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বরাবর এক স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিতে বদরুল আলমের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা,দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার করা ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।
জেলা প্রশাসকের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মো. আমিনুর রহমান স্মারকলিপি গ্রহণ করে তা প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দেন খাদিজার সহপাঠীদের।
এদিকে,সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে বিক্ষোভ করেন মহিলা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীরা। এমসি কলেজ ক্যাম্পাসেও বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। খাদিজার নিজ এলাকা সদর উপজেলার মোগলগাওয়ের হাউসায়ও বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী।
সাবেক শিক্ষার্থী অ্যাডভোকেট শিরিন আক্তার বলেন, ‘পাশবিক এই ঘটনার দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। ’
উল্লেখ্য, গত সোমবার এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে শাবি ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলম এমসি কলেজের পুকুর পাড়ে নার্গিসকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। বর্তমানে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে খাদিজার চিকিৎসা চলছে। অপারেশনের পর চিকিৎসকরা তাকে ৭২ ঘন্টার অবজারভেশনে রেখেছেন।
এ ঘটনায় বদরুলের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জাবনবন্দিও দিয়েছে।
আরও পড়ুন-
সেলফি'র জন্য কোহেলী কুদ্দুসের দুঃখপ্রকাশ
/এফএস/এপিএইচ/