ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ থেকে আসা শহীদ মিয়া নামে এক যাত্রীর কাছ থেকে প্রায় সাড়ে চার কেজি ওজনের স্বর্ণ উদ্ধার করেছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের একটি টিম। এ স্বর্ণের বাজার মূল্য সাড়ে চার কোটি টাকারও বেশি।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিএস ৩৪৬ নম্বর ফ্লাইটে শুক্রবার (১৭ মে) শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণের পর তাকে আটক করে তল্লাশিতে এ স্বর্ণ পাওয়া যায়। এরপর বিমানবন্দর থানায় ফৌজদারি মামলা করে তাকে সেখানে সোপর্দ করে কাস্টমস গোয়েন্দা।
এ বিষয়ে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত সার্কেলের সহকারী পরিচালক (চ. দা.) প্রদীপ কুমার সরকার জানান, স্বর্ণসহ এক যাত্রী আসার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে বোর্ডিং গেট, ট্রানজিট পয়েন্ট, গ্রিন চ্যানেলসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সতর্কতামূলক অবস্থান নেওয়া হয়।
তিনি বলেন, যাত্রী মোহাম্মদ শহীদ মিয়া ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে সকাল সাড়ে ৯টায় গ্রিন চ্যানেলের স্ক্যানিং মেশিন অতিক্রম করার পর তাকে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর টিমের সদস্যরা চিহ্নিত করেন এবং তার কাছে স্বর্ণালংকার বা স্বর্ণজাতীয় কোনও কিছু আছে কিনা জানতে চান। তখন তিনি তার কাছে ১০০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালঙ্কার থাকার কথা স্বীকার করেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তার কাছে ৩০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়। আর কোনও স্বর্ণ থাকার কথা অস্বীকার করায় তাকে আর্চওয়ে করানো হয় এবং তখন যাত্রীর পরনে অত্যধিক পরিমাণ জামাকাপড়ের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
যাত্রীর জামাকাপড়ের ওজন অস্বাভাবিক মনে হওয়ায় ওই জামাকাপড় খুলে স্ক্যানিং মেশিনে স্ক্যান করা হয় এবং জামাকাপড়ের মধ্যে বিশেষভাবে লুকায়িত স্বর্ণের ইমেজের অস্তিত্ব পাওয়া গেলে যাত্রীকে কাস্টমস হলে নিয়ে আসা হয়। পরে স্বর্ণের পরিমাণ নির্ণয়ের জন্য যাত্রীর শরীরে পরিহিত ১৬ পিস কাপড় (যার মধ্যে শর্ট প্যান্ট-৯টি, স্যান্ডো গেঞ্জি-৬টি ও ফুল প্যান্ট-১টি) স্থানীয় স্বর্ণকারের মাধ্যমে যাত্রী ও বিমানবন্দরে দায়িত্বরত বিভিন্ন সংস্থার উপস্থিতিতে বিমানবন্দরের ক্যানোপি-১ এ নিয়ে পোড়ানো হয়। পোড়ানোর পর অপরিশোধিত চার হাজার ৪৬২ গ্রাম পরিমাণ স্বর্ণ নির্ণয় করা হয়। প্রাপ্ত মোট স্বর্ণের পরিমাণ দাঁড়ায় চার হাজার ৪৯২ গ্রাম বা সাড়ে চার কেজি প্রায়।
কাস্টমস গোয়েন্দা আরও জানায়, প্রাপ্ত স্বর্ণের আনুমানিক বাজার মূল্য চার কোটি ৬০ লাখ টাকা। আটক স্বর্ণগুলো কাস্টম হাউস, ঢাকার মূল্যবান শুল্ক গুদামে জমা দেওয়ার কার্যক্রম চলছে। কাস্টমস আইন অনুযায়ী স্বর্ণসহ যাত্রীকে আটক এবং বিমানবন্দর থানায় তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হয়।