মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে রিভিউ করবে হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান। মুফতি হান্নানের আইনজীবীর বরাত দিয়ে আজ মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. মিজানুর রহমান।
সিলেটে সাবেক ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীকে হত্যাচেষ্টা মামলায় মুফতি হান্নানের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। গত ১৭ জানুয়ারি এ মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে মুফতি হান্নানকে কারাগারে মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেল সুপার মিজানুর রহমান। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এখন যথাযথ আইনগত প্রক্রিয়া শেষ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
কারাগার সূত্রে জানা গেছে, ৬৫ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি গত ১৭ জানুয়ারি আপিল বিভাগ প্রকাশ করে। রায় প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে নিয়ম অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ রায় পুনর্বিবেচনা করতে হবে আসামি পক্ষকে। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর দণ্ডাদেশ কার্যকর করার ক্ষেত্রে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন এবং সর্বশেষ দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারে আসামিরা। রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করে দিলে দণ্ডাদেশ কার্যকরে আর কোনও বাধা থাকবে না। তবে রাষ্ট্র চাইলে দণ্ডাদেশ কার্যকরের প্রস্তুতি নিতে পারে। আসামিরা যদি রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করে, তবে তাও শুনানির ব্যবস্থা আইনে রয়েছে।
কাশিমপুর কারাগারের জেল সুপার মিজানুর রহমান বলেন, ‘মুফতি হান্নানের আইনজীবী জানিয়েছেন, আসামির পক্ষ থেকে রায়ের রিভিউয়ের জন্য আবেদন করা হবে।’
গত ৭ ডিসেম্বর মৃত্যুণ্ডাদেশ বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে মুফতি হান্নানসহ তিন জঙ্গির আপিল শুনানি গ্রহণ করেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের আপিল বিভাগ। শুনানি শেষে ওই আপিল খারিজ করে দেন।
জেল সুপার জানান, আপিল বিভাগের রায়টি প্রথমে যায় হাইকোর্টে। এরপর রায়টি পাঠানো হয় বিচারিক আদালতে। বিচারিক আদালত মৃত্যু পরোয়ানা জারি করার পর তা গত শুক্রবার মুফতি হান্নানকে পড়ে শোনানো হয়।
এ মামলার বাকি দুই আসামি মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে হাইকোর্ট যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। আপিল না করায় তাদের ওই সাজাই বহাল থাকে। দণ্ডিত পাঁচ আসামির সবাই কারাগারে আছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টাসহ হরকাতুল জিহাদের ১৩টি নাশকতামূলক ঘটনায় শতাধিক ব্যক্তি নিহত হয়। এসব ঘটনার পেছনের মূল হোতা মনে করা হয় মুফতি হান্নানকে।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় মুফতি হান্নানের বাড়ি। ২০০০ সালের ২০ জুলাই কোটালীপাড়াতেই শেখ হাসিনার সভামঞ্চের কাছে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়। মুফতি হান্নান ওই মামলারও আসামি।
আরও পড়ুন-
