X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
১৯ বৈশাখ ১৪৩১

লাভ কম হওয়ায় পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকরা

জয়পুরহাট প্রতিনিধি
০৬ মার্চ ২০১৭, ১৪:৫১আপডেট : ০৬ মার্চ ২০১৭, ১৪:৫১

জয়পুরহাট

ধান,আলুসহ অন্য ফসলের তুলনায় লাভ কম হওয়ায় পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন জয়পুরহাটের কৃষকরা। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী প্রতি বছরই পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা কমছে। এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলার ২ হাজার ৯২৯ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৯১০ হেক্টর। তার আগের বছর অর্জিত হয় ২ হাজার ৯৫০ হেক্টর। কৃষি বিভাগের দেওয়া হিসেব মতে প্রতি বছরই পাট চাষের জমি কিছু কিছু করে কমছে।

জেলার পাঁচটি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাট চাষ হয় জয়পুরহাট ও পাঁচবিবি উপজেলায়। আক্কেলপুর ও ক্ষেতলালের সামান্য জমিতে পাট চাষ হলেও কালাই উপজেলায় কোনও পাট চাষ হয় না। গত বছর পাট চাষের অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী জয়পুরহাট সদরে চাষ হয়েছে এক হাজার ১০ হেক্টর জমিতে, পাঁচবিবিতে এক হাজার ৪২০ হেক্টরে, আক্কেলপুরে ৩৬০ হেক্টরে এবং ক্ষেতলালে ১২০ হেক্টর জমিতে। আর কালাই উপজেলায় পাট চাষই হয়নি।

সরেজমিনে সোমবার বেলা ১২টায় পাঁচবিবি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বেশকিছু পাট চাষির সঙ্গে কথা বললে, তারা পাট চাষে অনাগ্রহের কথা জানান।

রসুলপুর ইউনিয়নের গোপীনাথপুর গ্রামের কৃষক গোলাম মোস্তফা জানান, গত বছর তিনি দেড় বিঘা জমিতে পাট চাষ করলেও লাভ করতে পারেননি। বেশি টাকায় শ্রমিক নিতে হয়েছে বলে তাদের লাভ হয়নি।

তিনি আরও বলেন, এ ছাড়াও সরকারিভাবে পাটের যে বীজ সরবরাহ করা হয়, তা পাওয়া যায় অনেক দেড়িতে। ফলে সরকারের দেওয়া সুযোগ তাদের কাজে লাগে না। একই অভিযোগ ওই গ্রামের মামুনুর রশিদ, মোতালেব আলী, মীর কাশেমসহ অনেক কৃষকদেরও।

ধরঞ্জী গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান জানান, আবহাওয়া ভালও থাকলে বিঘাপ্রতি সর্বোচ্চ ৮ মণ পাট হয়। পাট চাষে যে পরিমাণ খরচ তাতে পোষায় না। বরং পাঁচবিবি এলাকায় কচুর লতির চাষ অনেক বেশি। লাভও অনেক বেশি। এজন্য আমরা পাট চাষ কমিয়ে দিয়েছি। এবার তিনি দেড় বিঘা জমিতে পাট চাষ করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বালিঘাটা গ্রামের মিজানুর রহমান জানান, আলু, ধান এবং কচুর লতি চাষ করে যে পরিমাণ লাভ হয়, তার সিকি পরিমাণ লাভও হয় না পাট চাষ করে। কাজেই আমাদের অঞ্চলের কৃষকরা দিন দিন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন পাট চাষ থেকে।

জয়পুরহাট সদরে বারিধারা মহল্লার বিশিষ্ট পাট ব্যবসায়ী দিলীপ কুমার সেন বলেন, ‘পাটের দাম বেশি হলেও বাজারে আগের চেয়ে আমদানি অনেক কমে গেছে। বর্তমানে বাজারে তোষা (কোচান) জাতের পাট বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৭৫০ টাকা মণ আর সাদা (টেবরা) জাতের পাট বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৪০০ টাকা মণ দরে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সুধেন্দ্রনাথ রায় পাট চাষে কৃষকদের আগ্রহ কমে যাচ্ছে এমন কথা মানতে নারাজ। তিনি বলেন, জেলায় পাট চাষ করার মত জমির পরিমাণ এমনিতেই কম।  তার ওপর আগে দাম কম ছিল এজন্য কৃষকরা অন্য ফসল আবাদ করতেন। কিন্তু পাটের দাম এখন বেশি হওয়ায় পাট চাষে কৃষকদের কিছুটা আগ্রহ বেড়েছে। জেলায় এবার ২ হাজার ৯২৯ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

 /জেবি/

আরও পড়তে পারেন : কোম্পানীগঞ্জে পাথর উত্তোলনের সময় শ্রমিক নিহত

 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
অপহৃত ১০ বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে আরাকান আর্মি
অপহৃত ১০ বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে আরাকান আর্মি
ধানমন্ডিতে ছাদ থেকে পড়ে গৃহকর্মী আহত 
ধানমন্ডিতে ছাদ থেকে পড়ে গৃহকর্মী আহত 
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে সকার স্কুলের বাছাইয়ে ৩ বাংলাদেশি কিশোর
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে সকার স্কুলের বাছাইয়ে ৩ বাংলাদেশি কিশোর
দীর্ঘ অপেক্ষার পর ঢাকায় স্বস্তির বৃষ্টি, কমলো তাপমাত্রা
দীর্ঘ অপেক্ষার পর ঢাকায় স্বস্তির বৃষ্টি, কমলো তাপমাত্রা
সর্বাধিক পঠিত
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক হচ্ছে
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক হচ্ছে
লাউ খেলে মিলবে এই ৮ উপকারিতা
লাউ খেলে মিলবে এই ৮ উপকারিতা