মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নেতা দেলোয়ার হোসেন রিপনের সঙ্গে দেখা করে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার ছেড়েছে তার পরিবার। বুধবার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৮টা ২৭ মিনিটে পরিবারটি কারাগার এলাকা ত্যাগ করে। এসময় উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীরা কথা বলার চেষ্টা করেন। তবে পরিবারটি কথা বলতে রাজি হয়নি।
এর আগে সন্ধ্যা ৬টা ৪৯ মিনিটে শিশু, নারী ও পুরুষসহ রিপনের সঙ্গে দেখা করতে তার পরিবারের মোট ২০জন সদস্য তিনটি গাড়িতে করে কারাগারে এসে পৌঁছান। কারাগার সূত্রে জানা গেছে, দেলোয়ার হোসেন রিপনের শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে তার পরিবারকে ডাকে কারা কর্তৃপক্ষ। আজ (বুধবার) সকালের দিকে বাবা-মার সঙ্গে ইফতার করার ইচ্ছা প্রকাশ করে রিপন।
এর আগে দুপুরের দিকে জেল সুপার ছগির মিয়া বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, জঙ্গি রিপন রোজা রেখেছে। সে তার বাবা-মার সঙ্গে ইফতার করতে চেয়েছে। বিকালে তারা আসবেন।
ওই সময় তিনি আরও জানান, রিপনের ফাঁসি কার্যকরে ১০ জন জল্লাদকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে। কারাগার ও এর আশপাশের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) সকালে রাষ্ট্রপতির কাছে করা রিপনের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ সংক্রান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠি সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছে। এরপর তা রিপনকে পড়ে শোনানো হয়। পরে বিকালে বাবা আ. ইউসুফ, মা আজিজুন্নেছা, ভাই নাজমুল ইসলাম ও তার স্ত্রী রিপনের সঙ্গে দেখা করেন।
উল্লেখ্য, সিলেটের হযরত শাহজালালের (রা.) মাজারে ২০০৪ সালের ২১ মে আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। হামলায় আনোয়ার চৌধুরী, সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত এবং পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত হন। ওই মামলায় ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত পাঁচ আসামির মধ্যে মুফতি হান্নান, শরীফ শাহেদুল বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ১৯ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে মুফতি হান্নানের রিভিউ আবেদন খারিজ করে আগের রায় বহাল রাখেন। এরপর তিন আসামিই রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন। রাষ্ট্রপতি আবেদন খারিজ করে দেন। এখন ফাঁসি কার্যকরে আর কোনও আইনি বাধা নেই। মুফতি হান্নান ও বিপুল গাজীপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে বন্দি আছেন।
/এমএ/
