বনানীতে দুই তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনা উল্লেখ করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেছেন, ‘বনানীর মতো অভিজাত ও জনবহুল এলাকার চার তারকা হোটেলে দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হলো। পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা থাকার পরও এ ঘটনা ঘটে। আর ঘটনার দেড় মাস পরও পুলিশ ঘটনা জানলোই না। তাহলে দেশে পুলিশের প্রয়োজনটা কী?’ তিনি আরও বলেন, ‘মামলা গ্রহণেই যদি পুলিশের কাছে ৪৮ ঘণ্টা ব্যয় হয় তবে সুনির্দিষ্ট ঘটনার পরও ভুক্তভোগীরা বিচার পাবে কখন ?’
মঙ্গলবার (৯ মে) বিকালে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘বনানীর ঘটনায় ৪মে অভিযোগ দায়ের করা হলেও নথিভুক্ত হতে ৬ তারিখ পর্যন্ত সময় লাগল। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকার পরও প্রভাবশালীদের কারণে সময় ক্ষেপণ করেছে পুলিশ। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জিডি (সাধারণ ডায়েরি) নয়, বরং সরাসরি এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করা উচিত ছিল। মামলা গ্রহণেই যদি পুলিশের কাছে ৪৮ ঘণ্টা ব্যয় হয়, তবে সুনির্দিষ্ট ঘটনার পরও ভুক্তভোগীরা বিচার পাবে কখন ?’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘পুলিশ চেষ্টা করলেই আসামিদের ধরতে পারে। পুলিশের গাফিলতিই বেশি লক্ষ্য করা গেছে। পুলিশ দ্রুত অভিযুক্তদের আটক করে আইনে সোপর্দ করবে বলে আমরা আশা করি।’
তিনি বলেন, ‘ব্যর্থতা কমানোর মনোভাব নিয়ে পুলিশকে এগিয়ে আসতে হবে। ভুক্তভোগীদের নিয়ে পুলিশের টালবাহানা করার প্রয়োজন নেই। ধর্ষিত মেয়েদের নিয়ে পুলিশের অশালীন উক্তি প্রদান বন্ধ হতে হবে।’
গাজীপুরে মেয়েসহ হযরত আলীর আত্মহত্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পুলিশের অসহযোগিতা ও প্রভাবশালীদের দাপট ও অমানবিক ভূমিকার কারণে এ ঘটনাটি ঘটেছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা বিষয়টি জানতেন। মেম্বার নিজেই ঘটনার জন্য হয়রত আলীকে টাকা পয়সা দিয়ে মিটমাট করতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা (হযরত আলীর পরিবার) বিষয়টি নিয়ে সতর্ক ছিল। কোনও প্রকার লোভ লালসার কাছে তারা মাথা নত করেননি। তারা অর্থ ফিরিয়ে দিয়ে নজির সৃষ্টি করেছেন।’
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘এ দুটি ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ভুক্তভোগীদের পক্ষে রয়েছে। তাদেরকে লিগ্যাল সাপোর্ট দিয়ে এগিয়ে যাবো এবং শেষ দেখে ছাড়বো।’
মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান বলেন, ‘খুলনার কলেজছাত্রী ধর্ষণ মামলাটি পর্যবেক্ষণ করে মানবাধিকার কমিশনে সুয়োমোটো কেস নেওয়া হবে। এরপর এ বিষয়টিও মানবাধিকার কমিশন থেকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হবে।’
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) জাতীয় অগ্রগতি বিষয়ে খুলনা বিভাগীয় পরামর্শ সভায় তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও ওয়ার্ল্ডভিশন বাংলাদেশ যৌথভাবে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে। খুলনা জেলা প্রশাসন অনুষ্ঠানটি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করে।
/এফএস/ এপিএইচ/
আরও পড়ুন-
‘ভাইরে মাথায় খেলে নাই, আগে বুঝলে নিজেই ছেলেকে পুলিশে দিতাম’ (অডিও)