আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী জো বাইডেনের জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ার আভাস দিয়েছে বিভিন্ন জরিপগুলো। তারপরও গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে মার্কিন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ আসন্ন নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না বলে জোর দিয়েছেন হোয়াইট হাউজের শীর্ষস্থানীয় উপদেষ্টারা। শনিবার (১৮ মে) আটলান্টার মার হাউজে এক বৈঠকে এ কথা বলেন উপদেষ্টারা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
বাইডেনের প্রচারণার কর্মকর্তারা মনে করেন, বিক্ষোভকারীরা মূলত ছোট একটি গোষ্ঠী। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে না তারা। তাদের মতে, গাজার পরিস্থিতি নয়, বরং অর্থনীতি ও অন্যান্য বিষয়গুলো তরুণ ভোটারদের মধ্যে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে।
তবে কিছু ডেমোক্র্যাট নেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, বাইডেনের গাজা যুদ্ধ নীতির কারণে দলের ভিতরে বিরোধিতা বাড়ছে, যা গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলোতে নির্বাচনি ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে। বিশেষ করে যেসব রাজ্যে ভোটের ব্যবধান খুব কম।
বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা গাজার পরিস্থিতি এবং ক্যাম্পাসের বিক্ষোভ নিয়ে সচেতন। কিন্তু তাদের মতে, আর্থিক এবং অন্যান্য ঘরোয়া বিষয়গুলোই তরুণ ভোটারদের কাছে প্রধান সমস্যা হিসেবে দেখা যাচ্ছে। তাদের মতে, তরুণ ভোটারদের কাছে আবাসন খরচ, মুদ্রাস্ফীতিই এখন শীর্ষ ইস্যু, গাজা যুদ্ধ নয়। হার্ভার্ডের সাম্প্রতিক এক জরিপ তুলে ধরে কর্মকর্তারা বলেন, কর, বন্দুক সহিংসতা, বেকারত্ব ইস্যুর পর ১৫ তম স্থানে রয়েছে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের বিষয়টি।
এদিকে, নতুন এক বুথ ফেরত জরিপে দেখা গেছে, গাজার যুদ্ধ ও মার্কিন ক্যাম্পাসের বিক্ষোভ মোকাবেলায় বাইডেনের ভূমিকায় বিভক্ত হয়ে গেছেন ডেমোক্র্যাটরা। ৪৪ শতাংশ নিবন্ধিত ডেমোক্র্যাট বাইডেনের সংকট মোকাবেলার দক্ষতায় অসন্তুষ্ট। ৫১ শতাংশ বিক্ষোভ মোকাবিলার ভূমিকায় অসন্তুষ্ট।
তরুণ ভোটাররা এখনও বাইডেনকে সমর্থন করে। তবে ২০২০ সালের তুলনায় সমর্থন উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। মার্চে আর এক জরিপে দেখা গেছে, ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সী মার্কিনিদের মাত্র ৩ শতাংশ ট্রাম্পের চেয়ে বাইডেনকে পছন্দ করেছে। বাকিরা অন্য প্রার্থীকে সমর্থন করে বা কেউ ভোট দেবে কিনা নিশ্চিত নয়।
তবে হোয়াইট হাউজের দুই কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। কারণ হিসেবে তাদের দাবি, ছোট বলা হলেও গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ-আন্দোলন অন্তত ৬০টির বেশি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহত হয়েছে কমপক্ষে ৩৫ হাজার ৩৮৬ ফিলিস্তিনি।