ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত হয় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট। এ রুটে প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার যাত্রী ও ১০ হাজার ছোট বড় যানবাহন পারাপারে ২৪ ঘণ্টা চলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) ১৮টি ফেরি। তবে বর্তমানে ফেরিগুলোর বেহাল দশা। আর ফেরিগুলোর মধ্যে সচল আছে ১৪টি। যার মধ্যে ৭টি রো রো (বড় আকারের),২টি কে-টাইপ (ছোট আকারের) ও ৫টি ইউটিলিটি (অল্প পানিতে চলতে সক্ষম)। আর অচল হয়ে পরা ৪টি ফেরি মেরামতের জন্য নারায়ণগঞ্জের ডক ইয়ার্ডে আছে।
জানা গেছে, ফেরিগুলোর মেয়াদকাল শেষ হওয়ায় প্রায়ই ইঞ্জিনের ক্রুটি দেখা দেয়। আর এসব বিকল ফেরি মেরামতের জন্য ডক ইয়ার্ডে নেওয়া হলে ফিরে আসতে ৮/১০ মাস সময় লাগে। ফলে অধিকাংশ সময়ই ঘাটে ফেরি সংকট থাকে। আর এ করণে যান পারাপার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়।
দৌলতদিয়া ঘাটে মো. শাহজাহান সেখ নামে এক যাত্রী বলেন,‘ফেরিতে নদী পার হতে অনেক সময় লাগে। আর ফেরির টয়লেটের অবস্থা একেবারেই বেহাল। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে নদী পার হতে হয়। বড় কয়েকটি ফেরি ছাড়া ছোট ফেরিতে বসার কোনও ব্যবস্থা নেই। তাই কর্তৃপক্ষের কাছে ফেরিগুলো আধুনিকভাবে সাজানোর অনুরোধ রইলো।’
অপর যাত্রী ওম্বার আলি বলেন,‘ফেরিতে খাবার পরিবেশ ভালো না। খাবারের দামও অনেক বেশি।’ বেনাপোল থেকে ঢাকাগামী কোহিনুর কুরিয়ার সার্ভিসের চালক আব্দুল লতিফ বলেন, ‘ফেরিতে উঠতে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। ফেরিগুলো পুরনো হওয়ায় আস্তে আস্তে চলে। এছাড়া দৌলতদিয়ায় প্রায় সময়ই যানজট লেগে থাকে। ফলে চালক ও যাত্রীদের অনেক কষ্ট হয়।’
যশোর থেকে মানিকগঞ্জগামী ট্রাক চালক সবুজ বলেন,‘যানবাহন পারাপারে আধুনিক ও উন্নতমানের ফেরি এবং দক্ষ ফেরি চালক নিয়োগে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
ইনল্যান্ড মাস্টার মো. হাবিবুর রহমান বলেন,‘এ নৌরুটে সর্বশেষ গোলাম মওলা ফেরি যুক্ত হয়েছে। অন্য ফেরিগুলো অনেক পুরনো হওয়ায় এগুলোর সমস্যা লেগেই থাকে। আধুনিক কোনও যন্ত্রপাতি ও সুযোগ সুবিধা (যেমন-ইকো সেন্ডার,রাডার,জিপিএস) কোনও ফেরিতে নেই। ফেরিগুলো তো ২৪ ঘণ্টাই চলতে থাকে। সময়ের অভাবে ফেরিগুলোর টয়লেট বা পরিবেশ পরিস্কার রাখা সম্ভব হয় না।’
এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট সহ-মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিআইডব্লিউটিসির ফেরিগুলো ২৪ ঘণ্টা সচল থাকায় যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই ফেরিগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটির মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে।’
/জেবি/এসএনএইচ/