X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
১৯ বৈশাখ ১৪৩১

কুষ্টিয়ায় বেশির ভাগ চাল কলে দুর্দিন চলছে

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
২৭ জুলাই ২০১৭, ১৭:১৮আপডেট : ২৭ জুলাই ২০১৭, ১৭:৪৮

 

কুষ্টিয়ার একটি চালকলে শ্রমিকরা ধান শুকাতে ব্যস্ত (ছবি- কুষ্টিয়া প্রতিনিধি) কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে দেশের অন্যতম বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার খাজানগরে এক প্রকার স্থবিরতা নেমে এসেছে। কমতে থাকা চালের বাজার গত এক সপ্তাহে ফের বাড়তে শুরু করেছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে চালের বাজারে এর প্রভাব আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন মিল মালিক ও ব্যবসায়ীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুষ্টিয়ার খাজানগরে চালকল রয়েছে প্রায় ৩৭৫টি। এর মধ্যে অটোমেটিক চালকলের সংখ্যা ৩২টি। বাকি সব হাসকিং মিল। এরমধ্যে অনেক মিল মালিক পুঁজি হারিয়ে সর্বশান্ত। পুঁজি সঙ্কট, ধানের দাম বৃদ্ধি ও শ্রমিক না পাওয়া এর বড় কারণ বলে জানিয়েছেন ওই সব মিল মালিকরা। এসব মিল উৎপাদনে না আসায় চালের বাজারে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন চাল ব্যবসায়ীরা। খাজানগর এলাকার রাসেল রানা, মুন্সিগঞ্জ ও ভেড়ামারা রাইসমিল চলতি মৌসুমে উৎপাদনে আসতে পারেনি। তাদের মতে প্রায় দুইশ’র বেশি মিল মালিক এ বছর এক বস্তা চালও উৎপাদন করতে পারেনি। 

রাসেল রানা রাইস মিলের মালিক জিল্লুর রহমান জানান, এ বছর ধানের দাম অনেক বেশি। বেশি দামে ধান কিনে চাল তৈরি করে খুব একটা লাভ হয় না। এছাড়া ব্যবসায় মার খেয়ে পুঁজি সঙ্কেটে আছেন তারা। তার ওপর শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এসব কারণে তারা চলতি মৌসুমে চাল উৎপাদনে যেতে পারেনি।

প্রায় একই কথা বলেন মুন্সীগঞ্জ ও ভেড়ামারা রাইস মিলের মালিক মাসুদ রানা ও হাজি ফজর আলী। ব্যবসায় মন্দা যাচ্ছে উল্লেখ করে তারা বলেন, ‘ধানের দাম গত বছরের তুলনায় মণ প্রতি  ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বেড়েছে। এ অবস্থায় ধান কিনে চাল তৈরি করতে গেলে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এতে আমাদের পোষাচ্ছে না। এছাড়া ধানও ঠিকমত পাওয়া যাচ্ছে না।’

গত বারের তুলনায় খাজানগর মোকামে এ বছর চাল উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। এদিকে গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে নতুন করে বেকায়দায় পড়েছেন মিল মালিকরা। বেশির ভাগ মিলে ধান শুকানো ও চাল উৎপাদনের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। এর সঙ্গে জড়িত শ্রমিকরাও পড়েছেন বেকায়দায়। কারণ কাজ না থাকলে তারা টাকা পান না। জুলাই মাসের শুরুতে চাল আমদানি ও শুল্ক কমানোর ফলে কুষ্টিয়া মোকামে চালের দাম বস্তাপ্রতি ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত কমে যায়। গত এক সপ্তাহে আবার বস্তা প্রতি ৩০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে গেছে।

চালকল মালিক হাজি লিয়াকত হোসেন জানান, অর্ডার থাকলেও ধান সিদ্ধ ও শুকাতে পারছি না। বৃষ্টির কারণে চাতাল বন্ধ রয়েছে। এমন অবস্থা আরও কয়েকদিন থাকলে চালের বাজার ফের বেড়ে যাবে।

খাজানগর মোকামে মোটা চালের বাজার কিছুটা কম থাকলেও মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৩০ টাকা থেকে ২ হাজার ৫৬০ টাকায়। আগের তুলনায় ৫০ টাকা বেশিতে। একই ভাবে কাজল লতা, আঠাশ চালের দাম প্রতি বস্তায় ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

কুষ্টিয়া চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন প্রধান জানান, বৃষ্টির কারণে বেশির ভাগ চাতাল বন্ধ হয়ে গেছে। চলতি মৌসুমে ধান সঙ্কটের কারণে প্রায় ৬০ ভাগ হাসকিং মিল মালিক তাদের চাতাল বন্ধ রেখেছে। এরও একটা প্রভাব বাজারে পড়ছে। যে পরিমাণ চাল গত বছর খাজানগর মোকামে উৎপাদন হয়েছিল তার থেকে অনেক কম এবার উৎপাদন হচ্ছে। ধান ও শ্রমিক সঙ্কটের পাশাপাশি বৃষ্টি দীর্ঘায়িত হলে চালের বাজারে এর প্রভাব পড়বে।

এদিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন জানান, মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে টানা কয়েক দিন বৃষ্টি হচ্ছে। এ বৃষ্টি আরও  দুই -একদিন অব্যাহত থাকতে পারে।

/জেবি/

আরও পড়তে পারেন: সংগ্রাম করে এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিবন্ধী কলেজ ছাত্রী আদুরি


সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে সকার স্কুলের বাছাইয়ে ৩ বাংলাদেশি কিশোর
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে সকার স্কুলের বাছাইয়ে ৩ বাংলাদেশি কিশোর
দীর্ঘ অপেক্ষার পর ঢাকায় স্বস্তির বৃষ্টি, কমলো তাপমাত্রা
দীর্ঘ অপেক্ষার পর ঢাকায় স্বস্তির বৃষ্টি, কমলো তাপমাত্রা
রোমাঞ্চকর ম্যাচে ১ রানের নাটকীয় জয় হায়দরাবাদের 
রোমাঞ্চকর ম্যাচে ১ রানের নাটকীয় জয় হায়দরাবাদের 
মামুনুল হকের জন্য কাশিমপুর কারাগারের সামনে ভক্তদের ভিড়
মামুনুল হকের জন্য কাশিমপুর কারাগারের সামনে ভক্তদের ভিড়
সর্বাধিক পঠিত
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক হচ্ছে
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক হচ্ছে
লাউ খেলে মিলবে এই ৮ উপকারিতা
লাউ খেলে মিলবে এই ৮ উপকারিতা