জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিবেশীর নির্মাণ করা দেয়ালের মধ্যেই আটক পড়েছে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার সুলতানশী গ্রামের তিনটি পরিবার। বাড়ির তিনদিকে পাকা দেয়াল নির্মাণ ও একদিকে নালা থাকায় বাইরে বের হতে পারেন না পরিবারের কেউ। তবে বিকল্প পথ হিসেবে নালা ব্যবহার করলেও সেখানে কাঁটা ফেলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে প্রভাবশালীরা। ফলে মানবেতর জীবনযাপন করছে অসহায় পরিবারগুলো। এ অবস্থায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে পরিবারগুলো।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার সুলতানশী গ্রামের গেদা মিয়ার ছেলে আয়াত আলী ও তার তিন ভাই নিজেদের জমিতে প্রায় ৪০ বছর ধরে বসবাস করছেন। সম্প্রতি পাশের বাড়ির সৈয়দ সামছুদোহা ও সৈয়দ ফাহিম মিয়া জমিটি তাদের কাছে বিক্রি করে অন্যত্র চলে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে রাজি না হওযায় বাড়ির তিনপাশে পাকা দেয়াল নির্মাণ করে পরিবারগুলোকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়। নিরীহ পরিবারগুলো বিকল্প রাস্তা হিসেবে নালা ব্যবহার করলেও সেখানে কাঁটা ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। ফলে আটকা পড়া পরিবারগুলোর সন্তানরা স্কুলে যেতে পারছে না।
এ ব্যাপারে গ্রামের মুরুব্বি আব্দুল মন্নান বলেন, ‘নিরীহ তিনটি পরিবারের ওপর প্রভাবশালীরা মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চলাচ্ছে। তাদের ভয়ে কেউ কথা বলার সাহস পাচ্ছে না।’
গ্রামের যুবক ফুল মিয়া বলেন, ‘পরিবারগুলোর প্রতি প্রভাবশালীদের নির্যাতন মানবতাকে হার মানিয়েছে।’
গৃহবন্দি থাকা শিশু পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আবির জানান, চারদিকে দেয়াল নির্মাণ করায় তারা স্কুলে যেতে পারছে না। এমনকি ঘর থেকে বেরও হতে পারছে না। তারা এখন বন্ধি জীবনযাপন করছি।
গৃহবন্দি থাকা ৮৫ বছরের বৃদ্ধা ছালাতুন্নেছা বলেন, ‘আমি অসুস্থ কিন্তু কোনও প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হতে পারছি না। কোনও চিকিৎসাও নিতে পারছি না।’
গৃহবন্দি থাকা সোহেনা আক্তার বলেন, ‘গৃহবন্দি থাকায় আমরা অসহায় জীবনযাপন করছি। এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
দেয়াল নির্মাণকারী সৈয়দ ফাহিম মিয়া বলেন, ‘আমাদের জায়গায় আমরা দেয়াল নির্মাণ করেছি তাতে কারও কোনও অসুবিধা হলে সেটা আমার দেখার বিষয় নয়।’
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিনুল হক বলেন, ‘এ বিষয়ে কেউ থানায় অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’