X
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪
২১ বৈশাখ ১৪৩১

সাতক্ষীরায় সড়কে ৮০০ যানবাহন ফিটনেসবিহীন

আসাদুজ্জামান সরদার, সাতক্ষীরা
০৮ আগস্ট ২০১৮, ২২:০৩আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০১৮, ২৩:২১

গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা করছে পুলিশ সাতক্ষীরার বিভিন্ন রুটে ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলছে। জেলায় ফিটনেসবিহীন যানবাহনের সংখ্যা আটশরও বেশি। সাতক্ষীরা বিআরটিএ অফিস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এ বছরের জানুয়ারি থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৩২ জন নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় সংবাদ মধ্যেমে প্রকাশিক খবরে জানা গেছে। এদিকে ট্রাফিক সপ্তাহ উপলক্ষে উপজেলার বিভিন্ন সড়কে অভিযান অব্যাহত রেখেছেন জেলা পুলিশ ও বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ। ফলে গত দুদিন জেলা শহরে যানবাহনের সংখ্যা কম লক্ষ্য করা গেছে। পুলিশ বলছে, যাদের বৈধ কাগজপত্র নেই ভয়ে তারা গাড়ি রাস্তায় বের করছেন না।

সূত্রমতে, ৮০০টি ফিটনেসবিহীন বিভিন্ন ধরনের যানবাহন সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন সড়কে চলাচল করছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে বাস ও ট্রাক। এ ছাড়া জেলায় প্রায় ১৫ হাজার নন্বরবিহীন মোটরসাইকেল চলাচল করছে। ফিটনেসবিহীন এসব যানবাহন সড়কে চলাচলের কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে। পঙ্গুত্ব বরণ করতে হচ্ছে অনেককে। অকালে প্রাণ হারাচ্ছেন বহু মানুষ। এসব যানবাহন থেকে ট্রাফিক পুলিশ চাঁদা নিয়ে থাকে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফিটনেসবিহীন বাস ও ট্রাক মালিকদের কাছ থেকে প্রতি মাসে ট্রাফিক পুলিশ মোটা অংকের চাঁদা আদায় করে থাকে।

সাতক্ষীরা বিআরটিএ অফিস সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা-যশোর, সাতক্ষীরা-কালিগঞ্জ, সাতক্ষীরা-শ্যামনগর, সাতক্ষীরা-আশাশুনি, ভোমরা, খুলনা ও তালার আঠারো মাইল সড়কে চলাচল করে থাকে ৪৫০টি বাস ও ৪০০টি ট্রাক।
এছাড়া মাইক্রো, প্রাইভেট, মিনি ট্রাক, জিপ, পিকআপ, অটোরিকশা, ভ্যান চলাচল করে থাকে কয়েকশ। মোটরসাইকেল চলাচল করে প্রায় ১২ হাজার।এগুলোর মধ্যে ৫০০টি যানবাহনের ফিটনেস নেই। ২৫০টি বাস, মিনিবাস ও ৫০টি ট্রাক দীর্ঘদিন ধরে ফিটনেসবিহীন অবস্থায় জেলার বিভিন্ন সড়কে চলাচল করছে। এছাড়া জেলায় প্রায় ১০ হাজার নম্বরবিহীন মোটরসাইকেল চলাচল করছে। আবার ট্রাফিক পুলিশের সামনে দিয়ে জেলা শহরে অবাধে চলাচল করছে এসব ফিটনেসবিহীন যানবাহন।

সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত জেলার ৮ থানায় ১০ জন নিহত, ৩ জন আহত হয়েছেন। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে ৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, এ বছরের জুন মাসেই একদিনে ছয়জন নিহতসহ ১০ জন নিহত ও ১৬ জন আহত হয়েছেন। জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত ৭ মাসে জেলায় সড়কে প্রাণ গেছে ৩২ জনের।আহত হয়েছেন ৫১ জন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার আশাশুনি, কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর উপজেলার সড়কে সবচেয়ে বেশি ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও নম্বরবিহীন মোটরসাইকেল চলাচল করে। দীর্ঘদিন ধরে লক্কড়ঝক্কড় মার্কা বাস ও মিনিবাস চলাচল করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলার বাস ও ট্রাকের কয়েকজন চালক জানান, বাস, ট্রাক, মাইক্রোসহ বিভিন্ন যানবাহন রাস্তায় চলাচল করতে হলে, তাদের ট্রাফিক পুলিশকে টাকা দিতে হয়। বিশেষ করে বাস ও ট্রাকের মালিকদের কাছ থেকে মাসে টাকা আদায় করা হয়। এ জন্য বিশেষ সংকেতযুক্ত টোকেন দেওয়া হয় ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে। মাস শেষে কখনও কখনও ট্রাফিক পুলিশের কোনও সদস্য আবার তাদের নিয়োগকরা লোক যেয়ে টাকা নিয়ে যায়। টাকা দিলে রাস্তায় তাদের কোনো ঝামেলা পোহাতে হয় না।

জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক (ডিআইওয়ান) আজম খান বলেন, জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত জেলার ৮ থানায় ১০ জন নিহত, ৩জন আহত এবং ৫টি মামলা দাযের হয়েছে।

এ ব্যাপারে ট্রাফিক পুলিশের সার্জন আব্দুল মোমিন জানান, বর্তমানে রোডে ফিটনেস বিহীন গাড়ির সংখ্যা অনেক কমে গেছে। প্রতিদিন মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন আটক করে মামলা দেওয়া হচ্ছে। রাস্তায় আগের নম্বর বিহীন মোটরসাইকেল চলাচল করছে না। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। টাকা নেওয়ার বিষয়টি তিনি একেবারে অস্বীকার করেন।

সাতক্ষীরা বিআরটিএ অফিসের মোটরযান পরিদর্শক প্রকৌশলী তানভির আহমেদ জানান, ফিটনেসবিহীন যানবাহন মালিকদের তারা নোটিশ করার পাশাপাশি বিভিন্ন সচেতনামূলক কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে তারা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে থাকেন। তারা এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। আটক যানবাহনকে জরিমানা ও মামলা করা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে। এছাড়া মোটরশ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে ফিটনেসবিহীন মোটরযান ও ডাইভিং লাইসেন্স না থাকায় ৩৭টি মামলা, ৩৪হাজার টাকা জরিমানা ও ২ জনকে জেল দেওয়া হয়েছে। আগের চেয়ে অনেক অংশে অবৈধ যানবাহন চলাচল কমে গেছে বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘সাতক্ষীরা বিআরটিএর নিজস্ব অফিস ও যানবাহন না থাকার কারণে আমাদের কাজে ব্যাহত হচ্ছে।’

 

/আইএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মুসলিমদের একাত্মতা ফিলিস্তিন সংকটের সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মুসলিমদের একাত্মতা ফিলিস্তিন সংকটের সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বৃষ্টির অপেক্ষায় নার্সারি ও গাছপ্রেমীরা
বৃষ্টির অপেক্ষায় নার্সারি ও গাছপ্রেমীরা
নিজ্জর হত্যার অভিযোগে কানাডায় তিন ভারতীয় গ্রেফতার
নিজ্জর হত্যার অভিযোগে কানাডায় তিন ভারতীয় গ্রেফতার
পিকআপের পেছনে ট্রাকের ধাক্কা, উল্টে গিয়ে ২ শ্রমিক নিহত
পিকআপের পেছনে ট্রাকের ধাক্কা, উল্টে গিয়ে ২ শ্রমিক নিহত
সর্বাধিক পঠিত
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নসহ সাত দফা দাবি সরকারি কর্মচারীদের
নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নসহ সাত দফা দাবি সরকারি কর্মচারীদের
মিল্টনের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিতদের এখন কী হবে
মিল্টনের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিতদের এখন কী হবে