গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান আক্কাস আলীর বিরুদ্ধে দুই ছাত্রীর যৌন হয়রানির অভিযোগে তাকে বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকে আজীবনের জন্য অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ওই শিক্ষককে জানুয়ারি-জুন ২০১৯ থেকে জুলাই-ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত মোট ৮ সেমিস্টারের জন্য সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজ থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. নুরউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এসব তথ্য জানানো হয়।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপকালে রেজিস্ট্রার জানান, গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক শিক্ষক আক্কাস আলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে ওই সময়ে (৪ বছর) তিনি বেতনসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্যান্য সুযোগ গ্রহণ করতে পারবেন কিনা তা তার জানা নেই।
তিনি আরো জানান, সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে তিনি শৃঙ্খলা বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোকাবেক চিঠিটি স্বাক্ষর করেছেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও শৃঙ্খলা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন গোপনীয় একটি বিষয়। এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা যাবে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি ও পরিবেশ বিবেচনা করে এবং তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ওপর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, উল্লেখিত সময়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুরো বেতন ও সুযোগ সুবিধা ভোগ করলেও তাকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কোন কাজ করতে হবে না।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান আক্কাস আলীর বিরুদ্ধে দুই ছাত্রী যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেন। অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানান। এক সময় বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ওঠে। পরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের শাস্তির দাবি ওঠে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের কঠোর শাস্তির দাবিতে ৭ এপ্রিল থেকে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। অভিযোগের তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মো. আব্দুর রহিম খানকে সভাপতি ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক ড. মো. বশির উদ্দিনকে সদস্য সচিব করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন, ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ঈশিকা রায় ও এসিসিই বিভাগের সভাপতি ড. মো. কামরুজ্জামান। তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।