X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভালো ফলনেও হাসি নেই ধানচাষির মুখে

মোজাম্মেল হোসেন মুন্না, গোপালগঞ্জ
১৮ মে ২০১৯, ১৯:৪১আপডেট : ১৮ মে ২০১৯, ১৯:৫১

ধান নিয়ে বাড়ি ফিরছেন কৃষকেরা (ছবি– প্রতিনিধি)

গোপালগঞ্জে এবছর ধানের ফলন ভালো হলেও চাষিদের মুখে হাসি নেই। একে তো বাজারে ধানের কাঙ্ক্ষিত দাম পাওয়া যাচ্ছে না, অন্যদিকে দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। পাশাপাশি বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ায় কষ্টের ফসল ঘরে তোলা নিয়ে চাষিদের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক।

বিভিন্ন উপজেলার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যারা কম জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছিলেন, তারা তা কাটছেনও। কিন্তু যারা বেশি জমিতে আবাদ করেছিলেন তারা ধান কাটা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। ধান কাটার মৌসুমে সাধারণত সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, যশোরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিক আসেন গোপালগঞ্জে। তারা ধানের বিনিময়ে কাজ করেন। কিন্তু এবছর বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় অন্য জেলার শ্রমিকেরা আসেননি।

সদর উপজেলার করপাড়া গ্রামের নজরুল ইসলাম জানান, অনেকে বাধ্য হয়ে স্থানীয় শ্রমিকদের বেশি পারিশ্রমিক দিয়ে ধান কাটাচ্ছেন। এদিকে বাজারে ধানের ভালো দাম না থাকায় তার মতো আরও অনেকে উৎপাদন খরচ তুলতে পারবেন না বলেই আশঙ্কা করছেন।

রঘনাথপুর গ্রামের কৃষক আলাউদ্দিন শেখ জানান, প্রতিবছরই জেলায় কম-বেশি শ্রমিক সংকট থাকে। কিন্তু এবছরের মতো তা এত প্রকট আগে কখনও ছিল না।

তিনি বলেন, এবছর প্রতি বিঘা জমিতে ৪০-৫০ মণ ধান হয়েছে। ফলে শ্রমিকও বেশি লাগার কথা; কিন্তু এখন শ্রমিকই পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ধানের উৎপাদন বেড়েছে, অন্যদিকে কৃষি শ্রমিক কমেছে। এ দুইয়ে মিলে সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে।

ধান কাটছেন শ্রমিকেরা (ছবি– প্রতিনিধি)

রঘুনাথপুর গ্রামের কৃষক রঞ্জিত বিশ্বাস জানান, বাজারে এখন ৫শ’ টাকা মণ দরে ধান বিক্রি হচ্ছে; যা উৎপাদন খরচ থেকেও কম। এভাবে যদি ধানের দাম কম হয়, তাহলে কৃষকেরা ধান উৎপাদন করেইবা কী করবে। কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ব্লক-সুপারভাইজারদের মাধ্যমে ধান কিনতে  সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক হরলাল মধুর জানান, আগে দেশের ৮০ ভাগ মানুষই কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত ছিল; সরকারি হিসাবে এখন তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। প্রকৃতপক্ষে কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িতদের সংখ্যা আরও কম। আগামীতে কৃষি শ্রমিকের সংকট আরও প্রকট হবে।

তিনি জানান, ‘মিনি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেসিন’ বাজারে এসেছে। এগুলো কৃষকরা সমিতি করে কিনতে পারেন। এতে তারা শ্রমিক সংকট থেকে বাঁচতে পারবেন। এ মেশিনের সাহায্যে ধান কাটা থেকে বস্তাবন্দি করতে কম শ্রমিক লাগে।

তিনি জানান, খাদ্য অফিসগুলো মিলারদের কাছ থেকে চাল সংগ্রহ করে। মিলাররা ইচ্ছেমতো ধানের দাম নির্ধারণ করে ধান কিনে। লাভ যা করার তা মিলাররাই করে। এ অবস্থা থেকে বেরুতে না পারলে কৃষকেরা লাভবান হবে না।

/এমএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
যাত্রা শুরু করলো ইউএস-বাংলার ‘এয়ারবাস’
যাত্রা শুরু করলো ইউএস-বাংলার ‘এয়ারবাস’
ব্রাইটনকে উড়িয়ে দেওয়ার পর সতর্ক ম্যানসিটি
ব্রাইটনকে উড়িয়ে দেওয়ার পর সতর্ক ম্যানসিটি
পরিবারের অভাব দূর করতে সিঙ্গাপুরে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন রাকিব
পরিবারের অভাব দূর করতে সিঙ্গাপুরে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন রাকিব
কেমন চলছে ভারতের লোকসভার দ্বিতীয় দফার ভোট?
কেমন চলছে ভারতের লোকসভার দ্বিতীয় দফার ভোট?
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ