X
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
১৬ বৈশাখ ১৪৩১

চুক্তির ২২ বছরেও ফেরেনি আস্থা ও বিশ্বাস

রাঙামাটি প্রতিনিধি
০২ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:০৫আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:২০

রাঙামাটি

দীর্ঘ দুই যুগ ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামে স্বায়ত্ত শাসনের দাবিতে আন্দোলন করেছে তৎকালিন গেরিলা সংগঠন শান্তিবাহিনী। বিভিন্ন সময় সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও সুফল পাওয়া যায়নি। অবশেষে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর তৎকালিন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতির পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি স্বাক্ষরের পর অর্থনীতিতে গতি আসলেও চাঁদাবাজি ও রাজনৈতিক হত্যাসহ ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি না হওয়ায় এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাস বাড়েনি।

পার্বত্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের ২২ বছর পার হলেও পাহাড়ে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি ও বাঙালির মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাস এখনো ফিরেনি। বরঞ্চ উভয় জনগোষ্ঠীর মাঝে বেড়েছে দূরত্ব ও সহিংসতা। চুক্তি স্বাক্ষরকারী সংগঠন জনসংহতি সমিতি ভূমি কমিশন কার্যকরসহ মৌলিক কিছু বিষয় বাস্তবায়ন না হওয়ায় জন্য সরকারকে দায়ী করছে। অন্যদিকে পাহাড়ি অন্য সংগঠনগুলোর মতে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির কারণে এই সমস্যার এখনো সমাধান হচ্ছে না। পাহাড়ে বসবাসরত সবাই ভেবেছিল চুক্তি ফলে পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি ফিরবে। পাহাড়ি-বাঙালির মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠাসহ ভাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধ হবে। চুক্তির এতো বছর পরও তাদের সে আশা পূরণ হয়নি।

রাঙামাটি জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র সাইফুল ইসলাম চৌধুরী ভূট্টো বলেন,‘আমরা চুক্তির বিপক্ষে আন্দোলন করেছিলাম। আমরা তখনও বলেছিলাম চুক্তিতে একটি পক্ষকে বেশি সুবিধা দেওয়া হয়েছে। ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির যে আইনটি করা হয়েছে তা বাস্তবায়ন হলে সরকার বাঙালিদের যেসব ভূমি দিয়েছে তারা সেগুলো থেকে বঞ্চিত হবে। এক দেশে দুই আইন হতে পারে না।’

তিনি আরও বলেন,‘যারা সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছে তাদের কাছে কেন এখনও অবৈধ অস্ত্র থাকে। তারাই পাহাড়ের শান্তি নষ্ট করছে, তাই চুক্তির পুনঃমূল্যায়ন জরুরি হয়ে পড়েছে।’

চুক্তি স্বাক্ষরকারী জনসংহতি সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক এমপি ঊষাতন তালুকদার মনে করেন, ‘চুক্তি বাস্তবায়নের যে গতিতে শুরু হয়েছিল এখন আর সেই গতি নেই। চুক্তির মৌলিক ধারাগুলো এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। যেমন ভূমি ব্যবস্থাপনা জেলা পরিষদের কাছে ন্যস্ত করা, পাহাড়ে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি করা, যেসব পাহাড়ি নিজের ভূমি ছেড়ে অন্যত্র রয়েছেন তাদের ভূমি ফিরেয়ে দেওয়া, স্থানীয় পুলিশ ব্যবস্থা চালু করাসহ আরও কিছু মৌলিক বিষয় বাস্তবায়ন না হওয়ার ফলে চুক্তি স্বাক্ষরকারীদের মনে চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জেলা সদরের বাইরে পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে কোনও সমস্যা দেখি না।’ নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে এই অঞ্চলের যে সমস্যা নিরসন সম্ভব বলে মনে করছেন এই নেতা।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার বলেন, চুক্তির পর এক ধরণের ধোয়া তোলা হয়েছিল। চুক্তির ফলে বাঙালিদের চলে যেতে হবে, তাদের কোনও ভোটাধীকার থাকবে না। অন্যদিকে পাহাড়িদের ভারতে চলে যেতে হবে। কিন্তু এতো বছরেও কাউকে কোথাও যেতে হয়নি। সকলের সমান ও ন্যায্য অধিকারের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সাম্প্রদায়িক রাজনীতি পরিহার করে সবার আস্থা ও বিশ্বাস ফেরানো সম্ভব বলে জানান আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্য।

 

 

 

 

 

/জেবি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে সরকার
খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে সরকার
ভুটানে আবার কোচ হয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশের বিদ্যুৎ
ভুটানে আবার কোচ হয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশের বিদ্যুৎ
ধর্ষণ মামলা: প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত জামিন পেলেন মুশতাক-ফাওজিয়া
ধর্ষণ মামলা: প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত জামিন পেলেন মুশতাক-ফাওজিয়া
সৌদি আরব পৌঁছেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সৌদি আরব পৌঁছেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সর্বাধিক পঠিত
থেমে যেতে পারে ব্যাংকের একীভূত প্রক্রিয়া
থেমে যেতে পারে ব্যাংকের একীভূত প্রক্রিয়া
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ
ভেসে আসা ‘টর্পেডো’ উদ্ধারে কাজ করছে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড
ভেসে আসা ‘টর্পেডো’ উদ্ধারে কাজ করছে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার