১৬ দফা দাবির মধ্যে স্বল্পমেয়াদি ৬টি দাবি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে না মানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর সংলগ্ন এলাকা অবরোধ করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মূল ফটকের দিকের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনায় বসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো আনোয়ারুল ইসলাম, ছাত্র উপদেশ ও নিদের্শনা পরিচালক অধ্যাপক ড. রাশেদ তালুকদার।
আলোচনা শেষে খসড়া সিদ্ধান্ত হিসেবে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সমস্যা নিরসনে আমরা দাবিগুলোর বিষয়ে কাজ করবো। আগামী রবিবার বা সোমবারের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে। অপরদিকে সন্ধ্যায় খসড়া সিদ্ধান্ত মানা হবে কিনা এমন আলোচনায় পুনরায় গোলচত্বরে অবস্থান করেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে দাবি আদায়ের আশ্বাস দেওয়া হলেও তা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, গত রবিবার (১ ডিসেম্বর) ছয়টি স্বল্পমেয়াদি ও ১০টি দীর্ঘমেয়াদি দাবিসহ ১৬টি দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত আল্টিমেটাম দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। স্বল্পমেয়াদি দাবিগুলো হলো- ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশে নিশ্চিত, আসন্ন তৃতীয় সমাবর্তন উপলক্ষে হল বন্ধের ঘোষণা প্রত্যাহার ও বছরের ৩৬৫ দিনই আবাসিক হল খোলা রাখা, ছেলে ও মেয়েদের হলে প্রবেশ ও বের হওয়ার ক্ষেত্রে বৈষম্য না করা, ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মান বাড়িয়ে দাম কমানো, টংগুলোতে খাবার বিক্রির অনুমতি দেওয়া ও দোকানগুলো খোলা রাখার ক্ষেত্রে সময় নির্ধারণ করে না দেওয়া, রাত ১০টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি খোলা রাখা, একাডেমিক সময়সীমার পরও একাডেমিক ভবনগুলোর মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু কক্ষকে রিডিংরুম হিসেবে বরাদ্দ দেওয়া, সংগঠনগুলোকে ভেন্যু বরাদ্দের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার অর্থ না নেওয়া এবং পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ না করা।
উল্লেখ্য, এসব দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল, অবস্থান কর্মসূচি, রোড পেইন্টিং, গ্রাফিতি অঙ্কন, উপাচার্য বরারব স্মারকলিপিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের ১৩তম দিনে বৃহস্পতিবার বিকালে এক কিলোমিটার পথ অবরোধ করে রাখেন তারা। পরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আলোচনায় বসে।