মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) খুলনার সার্কিট হাউজ ময়দানে আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এবার প্রথমবারের মতো জেলা ও মহানগর শাখার সম্মেলন একই দিন এবং একই মঞ্চে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই সম্মেলনকে ঘিরে নগর ও জেলা নতুন সাজে সেজেছে। তৃণমূলের কর্মীদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে উদ্দীপনা। মহানগর ও ৯ উপজেলার নেতা-কর্মীদের ছবি সম্বলিত তোরণ, ফেস্টুন ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে চারাপাশ।
প্রায় পাঁচ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের এই ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন।
সম্মেলন সফল করতে ইতোমধ্যে একধিক উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিদিন প্রায় একশ’ শ্রমিক মঞ্চ তৈরি ও প্যান্ডেল নির্মাণে কাজ করেছে। সভাস্থল ও এর বাহিরেও একধিক স্থানে প্রজেক্টরের মাধ্যমে সরসরি সম্প্রচারের মাধ্যমে সম্মেলন দেখার ব্যবস্থা থাকবে।
উদ্বোধন ও কাউন্সিল এই দুই ধাপে পুরো সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও রাতে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হবে।
সার্কিট হাউজের পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত ৪২০ ফুট দৈর্ঘ্য ও উত্তর থেকে দক্ষিণ পর্যন্ত ৩৪০ প্রস্থ নিয়ে প্যান্ডেল প্রস্তুতির কাজ চলছে। এখানে প্যান্ডেলে ৩০ হাজার মানুষের আসন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সার্কিট হাউজ ময়দানের পূর্বপাশে ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪০ ফুট প্রস্থ নিয়ে ডিজিটাল মঞ্চ নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলেছে। এখানে দুই শতাধিক নেতার বসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির ৬৭ জন ও ৯টি উপজেলা থেকে ১৫৭ জন কাউন্সিলর এবং ৪ হাজার ডেলিগেট অংশ নেবেন।
মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির ৬৬ জন ও ৩৬টি ওয়ার্ড থেকে ১২ জন করে ৪৩২, ৫টি থানা থেকে ৫ জন করে ২৫ জন কাউন্সিলর ছাড়াও ৩৬ সাংগঠনিক ওয়ার্ড থেকে ২শ’ জন করে ৭ হাজার ২শ’ জন ডেলিগেট সম্মেলনে যোগদান করবেন।
নগর সভাপতি সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, ‘সম্মেলন বর্ণাঢ্য ও দৃষ্টিদন্দন করার জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। নগরীতে প্রায় আড়াইশ’ তোরণ করা হয়েছে। তোরণে বঙ্গবন্ধু, আ.লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক, সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, সংসদ সদস্য শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল ও কেন্দ্রীয় সদস্য এসএম কামাল হোসেনের ছবি শোভা পাচ্ছে। নগরজুড়ে নেতৃত্ব প্রত্যাশীদের পোস্টার-ব্যানার শোভা পাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সম্মেলন শুরু হবে সকাল সাড়ে ১০টায়। এজন্য আগত নেতাকর্মীদের সকাল ৯টার মধ্যে সভাস্থলে প্রবেশ করতে হবে।’
জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ বলেন, ‘সম্মেলনকে সফল করতে ইতোমধ্যে সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কাউন্সিলর ও ডেলিগেটদের চিঠি দেওয়া হয়েছে।’
শেখ হারুনুর রশীদ বলেন, ‘নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে এবারের কমিটি গঠন করা হবে। তবে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত ও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা যার ওপর আস্থা রাখবেন, তিনিই নেতা নিবাচিত হবেন। কোনও হাইব্রিড, মাদকসেবী, চাঁদাবাজ ও ভূমিদস্যুকে দলে জায়গা দেওয়া হবে না।’
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি জেলা আ.লীগের সম্মেলনে শেখ হারুনুর রশিদকে সভাপতি ও এসএম মোস্তফা রশিদী সুজা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এর ৯ মাস পর গঠিত হয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি। ২০১৮ সালের ১৮ জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা রশিদী সুজা মারা যান।
অপরদিকে, ২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর মহানগর আ.লীগের সর্বশেষ সম্মেলনে তালুকদার আব্দুল খালেক সভাপতি ও মিজানুর রহমান মিজানকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। এরপর ২০১৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মহানগরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।