সুনামগঞ্জের সর্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে রাস্তাঘাট, লোকালয়সহ ১১ উপজেলার ৮২ ইউনিয়নের শতশত গ্রাম। সুরমা নদীর পানি কমলেও বাড়ছে হাওরের পানি। পুরো সুনামগঞ্জ শহরের সব আবাসিক এলাকা এখনও পানিতে তলিয়ে রয়েছে। বেশিরভাগ আবাসিক এলাকার লোকজন নৌকা দিয়ে যাতায়াত করছেন। অধিকাংশ বাড়িতে বন্যার পানি ওঠায় মানুষ পড়েছেন অবর্ণনীয় দুর্ভোগে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান জানান, বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি উন্নতি হতে পারে। তবে ধীর গতিতে পানি কমছে।
দুর্গত এলাকায় পৌরমেয়র নাদের বখতের উদ্যোগে খিচুড়ি বিতরণ করা হয়েছে। বেশির বসতবাড়ি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় রান্নার কোনও ব্যবস্থা নেই। পুরো শহরের ড্রেনেজ সিস্টেম ভেঙে পড়েছে। দেখার হাওর ও শহরের পানির স্তর সমান পর্যায়ে রয়েছে বলে জানা গেছে।
পৌরমেয়র নাদের বখত বলেন, শহরের বেশিরভাগ মানুষের বাড়িঘরে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। মানুষ রান্না করতে পারছেন না। এজন্য ব্যক্তিগত উদ্যোগে শহরের বিভিন্ন এলাকায় খিচুড়ি বিতরণ করা হচ্ছে। এই বন্যা যতদিন থাকবে ততদিন চালিয়ে যাওয়া হবে এ কার্যক্রম।
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, সুরমা নদীর পানি ষোলঘর পয়েন্টে বিপদসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ভারতে চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮৪ বৃষ্টিপাত হয়েছে। প্রতি তিন ঘণ্টায় তিন সেন্টিমিটার করে পানি কমছে সুরমা নদীতে।
বন্যা নিয়ন্ত্রণ পূর্বাভাস কেন্দ্রের বরাত দিয়ে পাউবো জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকবে।
জেলা প্রশাসনের বন্যা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১১ উপজেলার ৮২ ইউনিয়ন ও চারটি পৌরসভার ২০টি ওয়ার্ডে ৩৫২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ২২৯৭ পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৯৯ হাজার পরিবার। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় শুকনো খাবার ও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত ৮৫৫ মেট্রিক টন চাল, ৪৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা, ১৯০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।