কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রী ও তার চাচাকে অপহরণ করে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টার অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে চার অপহরণকারীকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাতভর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এসময় অপহরণে ব্যবহৃত একটি অ্যাম্বুলেন্স, একটি মোটরসাইকেল, একটি পিস্তল, দুটি ছুরি ও একটি বেলচা উদ্ধার করে তারা।
শনিবার (২২ আগস্ট) দুপুরে হোসেনপুর থানায় অপহরণকারী চক্রের সদস্যদের সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়।
আটকরা হলো- ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের পূর্বমেড্ডা গ্রামের মৃত জুলহাস ভূঁইয়ার ছেলে মো. শাহেদ ভূঁইয়া (৪২), হালদারপাড়ার বশির মিয়ার ছেলে রাজন ভূঁইয়া (৩৫), শিমরাইলকান্দি গ্রামের মৃত আব্দুল শুক্কুরের ছেলে আরিফ মাহমুদ (৩৪) ও কাজীপাড়া এলাকার সাইদুর রহমানের ছেলে বশির আহমেদ (৩৬)।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার রাতে একটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে হোসেনপুর পৌর এলাকার আড়াবাড়িয়া গ্রামে রিকশাচালক দ্বীন ইসলামের বাড়িতে হানা দেয় অপহরণকারীরা। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী পরিচয়ে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা বলে দ্বীন ইসলামের মেয়ে রিয়া আক্তরকে (১২) বাড়ি থেকে নিচ্ছিলো তারা। তখন ওই কিশোরীর চাচা মফিজ উদ্দিন (৪৫) ভাতিজিকে রক্ষা করতে গেলে তাকেও অস্ত্রের মুখে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে নিয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, অপহরণকারীরা চাচা-ভাতিজিকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে ব্রাহ্মবাড়িয়ার কাজীপাড়া এলাকার একটি বাড়িতে আটকে রাখে। তারা মুক্তিপণ বাবদ ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। টাকার জন্য চাচা মফিজ উদ্দিনের ওপর নির্যাতন চালায়। মেয়েটির বাবা দ্বীন ইসলাম রাতেই বিষয়টি পুলিশকে জানালে তারা উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে।
পুলিশের দাবি, পুলিশের ব্যাপক তৎপরতার খবর ভীত হয়ে শুক্রবার দুপরে স্কুলছাত্রী ও তার চাচাকে ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা। পরে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তারা হোসেনপুর পৌঁছে। এরপরই পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আবার অভিযানে নামে। হোসেনপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোনাহর আলীর নেতৃত্বে হোসেনপুর থানা পুলিশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে রাতভর অভিযান চালিয়ে অপহরণের অভিযোগ চার জনকে আটক করে।
এ বিষয়ে হোসেনপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সোনাহর আলী জানান, পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টার ঘটনায় মেয়েটির চাচি রেখা আক্তার বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে থানায় একটি মামলা করেছেন। এই মামলায় আটক চার জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তাদের রিামান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রক্রিয়া চলছে।