সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি উজানের চাপে পঞ্চম দফায় বাড়লেও আবার কমতে শুরু করেছে। সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে এখন যমুনার পানি বিপৎসীমার অন্তত ১২ সেন্টিমিটার নিচে। তবে পানি কমতে থাকায় পানির টানে আবার শুরু হয়েছে ভাঙন। বিশেষ করে সদর উপজেলার পাঁচঠাকুড়ি গ্রামে যমুনার পশ্চিম পাড়ে ভাঙনের মাত্রা বেড়েছে। সর্বশেষ ভেঙে বিলীন হয়েছে পাঁচঠাকুড়ি গ্রামের একটি মসজিদসহ আশেপাশের বাড়ি-ঘর, ফসলি জমি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই এলাকায় পাঁচঠাকুড়ি জামে মসজিদসহ বেশ ক’টি ঘরবাড়ি ও বসতভিটা গত শনিবার থেকে ভাঙনের কবলে পড়েছে। দু’মাস আগে পাঁচঠাকুড়ি গ্রামের উজানে পাউবোর ‘শিমলা তীর রক্ষা স্পারটি’ আকস্মিক নদী গর্ভে বিলীন হয়। এরপর থেকে এ অঞ্চলে থেমে থেমে ভাঙন দেখা দেয়। বর্তমানে এখানে ভাঙনের ব্যাপকতা আরও বেড়েছে। শনিবার দিনভর ভেঙে ভেঙে সন্ধ্যায় সম্পূর্ণ বিলীন হয় পাঁচঠাকুড়ি জামে মসজিদটি। রবিবারও এলাকাটির অবশিষ্টাংশ টিকিয়ে রাখতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো)-র লোকজন জিওব্যাগ বালির বস্তা নিক্ষেপ করে। গত দু’মাস থেকে পাউবো এখানে জিওব্যাগ বালির বস্তা নিক্ষেপ চালু রাখলেও কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না যমুনার অব্যাহত ভাঙন।
এদিকে, ভাঙন কবলিত অসহায় মানুষজন একদিকে বাড়িঘর সরিয়ে নিচ্ছেন, এখনও থেমে থেমে ভাঙনের ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়রা জানান।
ছোনগাছা ইউপি মেম্বর জহুরুল ইসলাম জানান, শিমলা, পাঁচ ঠাকুরী, ভাটপিয়ার এবং পারপাচিলসহ কয়েকটি গ্রামের সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষ গত দু’মাসে নদী ভাঙনে বসতভিটা ও ঘরবাড়ি হারিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। জ্ঞাতিগোষ্ঠীর বন্ধন ছিন্ন করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন অনেকেই।
পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী একেএম রফিকুল ইসলাম রবিবার দুপুরে বলেন, সিমলা স্পারটি সম্পূর্ণরূপে নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার পর থেকেই এ অঞ্চলে যমুনার ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি ফের কমতে শুরু করেছে। পানি কমাতে থাকায় থেমে থেমে ভাঙন বাড়ছে। আপ্রাণ চেষ্টা থাকা সত্ত্বেও পাঁচঠাকুড়ি মসজিদটি নদীগর্ভে চলে গেছে।
নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম জানান, বর্ষা পুরোপুরি শেষ হলে এ অঞ্চলকে ভাঙনমুক্ত করতে জরুরি ভিত্তিতে যথাসম্ভব প্রকল্প তৈরি করা হতে পারে।