পটুয়াখালীর তেঁতুলিয়া নদীতে বিলীন হচ্ছে বাউফলের ঘরবাড়ি, ব্যবসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জনপথ এবং আবাদি জমি। এ বছরের বর্ষা মৌসুমে শতাধিক ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে চলে গেছে।
জানা যায়, প্রায় ৪০ বছর ধরে তেঁতুলিয়া নদীতে অব্যাহত ভাঙনের শিকার হচ্ছে ধুলিয়া ইউনিয়ন। এই সময়ে সহস্রাধিক বাড়িঘর, ব্যবসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ভাষা সৈনিকের কবর, জনপথসহ কয়েক হাজার হেক্টর আবাদি জমি নদীগর্ভে চলে যায়। প্রায় বিলীনের পথে গোটা ইউনিয়ন।
গত কয়েক দিনে তেঁতুলিয়া নদীর তীব্র ভাঙনে ধুলিয়া লঞ্চ ঘাট এলাকায় সুমন গাজী, নয়ন গাজী, বিকাশ রায়, স্বপন মিস্ত্রি, রতন রায়, কৃষ্ণ দাস, সোহরাব হোসেন, খলিল শরীফ, ননী সীল, রিয়াজ স্বন্যমত, দুলাল, লিটু মৃধা, উত্তাম ঘরামি, নিমু ঘরামি, নিজাম হাওলাদার, মোশারেফ হাওলাদার, আবু সালেহ, মোহাম্মদ হারুন, বিমল দাস, শাহিন মৃধা, মন্টু রাড়ি, কবির ডাওরী, কমল সীল, তপন সেন, সুলতান ফকির, সুধাংশু, মীর হাবিবুর রহমান, রাসেল শরীফ, জলিল সওদাগর, হেলাল সওদাগর, শামিম মৃধা, যতীন রক্ষিত, আবুল গাজী, জাকির গাজী, রব মিয়া, আবুল কালাম উকিল, সোহেল মৃধা, খলিল গাজী, বাবুল মৃধা, ইসমাইল, অসীম, মতিয়ার রহমান, মিজান, জলিল চৌকিদার, সিদ্দিক প্যাদা, রিপন, সুন্দর আলী খান, জাহাঙ্গীর মোল্লা, সালেহ মুসলমানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ একই ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন বাজার এলাকায় পান্নু মোল্লা বাড়ির ৫টি ঘর ও একটি মসজিদ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এছাড়াও ধুলিয়া দাখিল মাদ্রাসার এক তৃতীয়াংশ নদীর পেটে চলে গেছে। ইতিমধ্যে মাদ্রাসার টিনশেড ভবনের বাকি অংশ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ওই এলাকার মানুষ এখন নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে।
ধুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আনিচুর রহমান বলেন, এখন ভাঙন আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। ধুলিয়ার অনেক জায়গা নদী ভাঙনের কবলে পড়ে ইউনিয়নটি ছোট হয়ে গেছে। ভাঙন রোধে ৭শ’ ১২ কোটি ২১ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। আগামী মাসেই টেন্ডার। শুকনো মৌসুমে কাজ শুরু হবে।
পটুয়াখালী জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি সূত্র জানায়, গত ১৮ আগস্ট একনেকের এক সভায় বাউফলের ধুলিয়া লঞ্চ ঘাট থেকে বাকেরগঞ্জের দূর্গাপাশা পর্যন্ত ভাঙন রোধে জিওবির অর্থায়নে ৭শ’ ১২ কোটি ২১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। চলতি বছর জুন থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।