X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

তদবিরের চাপে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন দুই প্রধান শিক্ষক

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
১৬ জানুয়ারি ২০১৬, ১৪:২৪আপডেট : ১৬ জানুয়ারি ২০১৬, ১৪:২৭

সিরাজগঞ্জ

ভর্তি পরীক্ষায় অপেক্ষমান ও অকৃতকার্য শতাধিক শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের তদবিরের চাপে এবং লাঞ্ছিত হওয়ার ভয়ে গত কয়েক দিন ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন সিরাজগঞ্জ জেলা শহরের সরকারি দুই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তারা হলেন, সালেহা ইসহাক সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম আল হালিম আজাদী ও বিএল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আ ফ ম নাজিম উদ্দিন হোসাইন।

গত ক’দিন স্কুল দুটির অন্যান্য শিক্ষকরা হাজির হলেও বিভিন্ন অজুহাতে দুই প্রধান শিক্ষক স্কুলে আসছেন না। নৈতিকতা বিসর্জন যাতে না দিতে হয় সেজন্য তারা মোবাইল ফোনও বন্ধ রেখেছেন বলে সংশ্লিষ্ট স্কুল সূত্রে জানা গেছে।

গত ২০ ডিসেম্বর তৃতীয় শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পরই অভিভাবকরা তদবির শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, চলতি শিক্ষাবর্ষে সন্তানদের ভর্তির আশায় শতাধিক অকৃতকার্য ও অপেক্ষমান ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জেলা প্রশাসক ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সুপারিশ নিয়ে স্কুল দুটিতে ঘুরছেন। প্রধান শিক্ষককে না পেয়ে অন্যান্য শিক্ষকদের দারস্থ হচ্ছেন তারা। এ কারণেই শুধু প্রধান শিক্ষকই নন, সব শিক্ষকরা বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন।

বুধ ও বৃহস্পতিবার সরকারি দুই স্কুলে গিয়ে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়। সুপারিশ নিয়ে বেশ ক’জন অভিভাবককে ঘুরতে দেখা যায়।

সরকারি সালেহা ইসহাক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আইরিন পারভীন জানান, প্রধান শিক্ষক বিশেষ কারণে ছুটি নিয়েছেন। তদবিরকারীদের সুপারিশের কারণে আমরা বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি। গত ক’দিনে জেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ৫০টি সুপারিশ পেয়েছেন বলেও জানান। 

বিএল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম খানও একই ধরনের মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক নিজেই দু’স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি ও ভর্তি কমিটির সভাপতি। তিনি নিজে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের পরীক্ষা নিয়েছেন। মেধা তালিকায় যারা উত্তীর্ণ হয়েছে শুধু তাদেরই ভর্তি করা হয়েছে। অথচ তার ২৭টি সুপারিশ নিয়ে হন্যে হয়ে ঘুরছে কিছু স্থানীয় অকৃতকার্য ও অপেক্ষমান শিক্ষার্থীও অভিভাবকরা। এরা এতোটাই অভদ্র যে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলার সময় প্রয়োজনীয় সৌজন্যতা বোধটুকুও বজায় রাখে না।

সালেহা ইসহাক সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে স্কুলে না পেয়ে তার বাড়িতে গেলেও তিনি প্রথমে সামনে আসতে রাজি হচ্ছিলেন না। পরে তিনি বলেন, ‘আমি হজ করে এসেছি। আমি কোন দুই নাম্বারি করতে পারবো না। এতে আমার জীবন থাকুক, আর না-ই থাকুক।’

এ প্রসঙ্গে জেলা শিক্ষা অফিসার লায়লা খানম বলেন, ‘জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে অপেক্ষমান ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ৫৮টি সুপারিশ পেয়ে সেগুলো ওই দুই স্কুলে পাঠিয়ে দিয়েছি। আরও প্রায় ১২টি সুপারিশ অপেক্ষমান রয়েছে। ওই স্কুলেরই প্রধান শিক্ষকরা মোবাইল বন্ধ রাখায় আমি নিজেও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না।’

জেলা প্রশাসক এবং দুই স্কুলের ম্যানিজিং ও ভর্তি কমিটির সভাপতি মো. বিল্লাল হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ওই দু’স্কুলে ভর্তি হতে না পারলেই যে সন্তান-সন্তনী মানুষ হবে না। এ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অভিভাবকদের বের হয়ে আসতে হবে। অনেক সময় এমন লোকজন অুনুরোধ করেন, যে সুপারিশ না দিয়েও পারা যায় না। ওই দু’টি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে আসন সংকুলান না হলে প্রধান শিক্ষকরাই কিভাবে নতুন করে শিক্ষার্থী ভর্তি করবেন। সেটা কোন অভিভাবকই বোঝার চেষ্টা করেন না।’

 

/এসটি/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
গোপনে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
গোপনে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
টিপু-প্রীতি হত্যা মামলার অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ ২৯ এপ্রিল
টিপু-প্রীতি হত্যা মামলার অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ ২৯ এপ্রিল
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ক্যাসিনো কাণ্ডের ৫ বছর পর আলো দেখছে ইয়ংমেন্স ও ওয়ান্ডারার্স
ক্যাসিনো কাণ্ডের ৫ বছর পর আলো দেখছে ইয়ংমেন্স ও ওয়ান্ডারার্স
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
আপিল বিভাগে নিয়োগ পেলেন তিন বিচারপতি
আপিল বিভাগে নিয়োগ পেলেন তিন বিচারপতি