X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

নছিমন-করিমন-ভটভটির মতো ঝুঁকিপূর্ণ যানে কাজ করছে শিশুরা

আশরাফ উদ্দিন সিজেল, ময়মনসিংহ
২৯ মার্চ ২০১৬, ১০:৫০আপডেট : ২৯ মার্চ ২০১৬, ১০:৫০

নছিমন-করিমন-ভটভটির মতো ঝুঁকিপূর্ণ যানে কাজ করছে শিশুরা

ময়মনসিংহের বিভিন্ন উপজেলায় নসিমন, করিমন ও ভটভটির শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে শিশুরা। কাজ করতে গিয়ে এসব যানের টু-স্টোক ইঞ্জিনের বিষাক্ত কালো ধোঁয়া আর বিকট শব্দে এরইমধ্যে শতাধিক শিশু বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, চর্মরোগ, শ্রবনশক্তি হ্রাস ও হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও দুর্ঘটনায় পঙ্গু হয়েছে অনেকে।

জেলার গফরগাঁও, হালুয়াঘাট, ত্রিশাল, ভালুকা, ধোবাউরা, নান্দাইল, ফুলবাড়িয়া, ফুলপুর ও মুক্তাগাছা উপজেলায় ছোট-বড় মিলে প্রায় শতাধিকের মত সড়কে নসিমন, করিমন, ভটভটি চলাচল করে। সেচ কাজের জন্য নির্ধারিত ডিজেল চালিত টু-স্টোক শ্যালো ইঞ্জিন দিয়ে স্থানীয়ভাবে তৈরি এসব যানবাহনের মাধ্যমে মালসহ যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। সরকারিভাবে নিষিদ্ধ টু-স্টোক ইঞ্জিনের এসব যানবাহনের প্রধান সমস্যা কার্বন মনোঅক্সাইড, সালফার ড্রাই অক্সাইড, কার্বন ড্রাই অক্সাইড মিশিত কালো ধোঁয়া এবং বিকট শব্দ। আর ওইসব নসিমন, করিমন, ভটভটিতে ৮ থেকে ১২ বছরের প্রায় ৪ শতাধিক শিশু ঝুঁকি নিয়ে হেলপার হিসেবে কাজ করছে। ১০ থেকে ১৬ বছরের দুই শতাধিক শিশু হাইড্রলিক ব্রেক কিংবা গিয়ার এবং সামনে পিছনে সিগন্যাল বাতি বিহীন এসব যানবাহনের চালক হিসেবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে। ঝুঁকিপূর্ণ কাজ হলেও শিশুরা মজুরি পায় অত্যন্ত কম। হেল্পার হিসেবে রোজ ৫০ থেকে ৬০ টাকা। ড্রাইভার হিসেবে কাজ করলে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা।

গফরগাঁও উপজেলার টাংগাব গ্রামের ছলিমউদ্দিনের ছেলে রফিকুল, নসিমনের হেলপার। মাঝে মধ্যেই তার শ্বাসকষ্ট হয়, বয়স এখনও বার পেরোয়নি। ১ম শ্রেণীর পাশ করে তার স্কুলে যাওয়া হয়ে উঠেনি। অভাবের তাড়নায় ৮ বৎসর বয়স থেকে নসিমনের হেলপার হিসেবে কাজ করছে। শুধু রফিকুল নয় রফিক (১২), বুলবুল (১১), নয়ন (১০), কাঞ্চন (৯), মনির (৯), শহীদ (১২),  লিটনের (১৫), মত অনেক শিশুই নসিমন, করিমন, ভটভটির হেলপার হিসেবে কাজ করছে। গাড়িতে ধাক্কা দেওয়া, গাড়ির ধোঁয়া মোছার কাজসহ যাত্রী ডেকে গাড়িতে তোলা, ভাড়া নেওয়া সবই করতে হয় তাদের।

তারা জানায়, ভোরবেলা কিছু মুখে দিয়ে চলে আসে নির্ধারিত স্টান্ডে, দুপুরে হালকা নাস্তা, সন্ধ্যায় কাজ শেষে ৪০-৫০ টাকার হাজিরা নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়। নসিমন, করিমন, ভটভটির বিষাক্ত কালো ধোঁয়া আর বিকট শব্দ তাদের গা-সওয়া হয়ে গেছে। এই ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমে অংশগ্রহণে নিরুৎসাহিত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঝে মধ্যে অভিযান চালিয়ে অনেক শিশুকে আটক করে, তাদের বাবা-মার কাছ থেকে মুচলেকা আদায় করলেও অর্জন খুব সামান্য। কারণ ঘরে নিত্য অভাব, দরিদ্র বাবা-মার সংসার চলে না। তাই স্কুলে না পাঠিয়ে দরিদ্র বাবা-মা বাড়তি আয়ের আশায় শিশুদের পাঠিয়ে দেয় নসিমন, করিমন ও ভটভটির হেলপারি করতে।

/জেবি/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
লাল কৃষ্ণচূড়া, বেগুনি জারুলে ছুঁয়ে যায় তপ্ত হৃদয়
লাল কৃষ্ণচূড়া, বেগুনি জারুলে ছুঁয়ে যায় তপ্ত হৃদয়
টিভিতে আজকের খেলা (২৭ এপ্রিল, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (২৭ এপ্রিল, ২০২৪)
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা