পদ্মার বিশাল চরে শহরসহ হবে বিনোদন কেন্দ্র, হবে নৌবন্দর। ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কে রাজস্ব বাড়বে সরকারের।-এগুলো এখনও স্বপ্ন, তবে হয়তো অবাস্তব নয়। এই স্বপ্নের পেছনে এখন ছুটছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদন নিয়ে এই প্রকল্প আদৌ বাস্তবসম্মত হবে কিনা তার জন্য শুরু করেছেন সম্ভাব্যতা যাচাই। বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ‘রিভার সিটি’নামে এ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে ও কারিগরি সমীক্ষার জন্য মার্স ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদলকে স্পিডবোটে পদ্মার চর ঘুরিয়ে দেখিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত টি-বাঁধ থেকে শ্যামপুর পর্যন্ত এলাকা স্পিডবোটে চেপে পরিদর্শন করেন তারা। মার্সের পক্ষে নেতৃত্ব দেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সাঈদ চৌধুরী।
পরিদর্শনের যাওয়ার আগে রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন সাংবাদিকদের বলেন, রাজশাহী শহরের টি-বাঁধ হতে শ্যামপুর পর্যন্ত প্রায় ১০ থেকে ১১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য পদ্মা নদীতে চর জেগে আছে। এটি চওড়ায় কম-বেশি ৫০০ মিটার। প্রায় ১৫/২০ বছর ধরে চরটি জেগে আছে, ভেঙে যায়নি। পদ্মার এই চরের উন্নয়ন করে ব্যবহার উপযোগী হিসেবে গড়ে তোলা যায় কিনা তা ভাবছি। এ ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। প্রথমে নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনতে ড্রেজিং করতে হবে। এখানে নদীর নাব্য ফিরিয়ে এনে আন্তর্জাতিক নৌবন্দর প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই নৌ-রুট চালু হলে পাশের দেশ ভারত থেকে পাথরসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি-রফতানি করা সম্ভব।
তিনি বলেন, এটি চালু হলে বাণিজ্যিক যোগাযোগ বাড়বে, উভয় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। বিশাল আয়তনের ল্যান্ড রিক্লেইম করে এখানে রিভার সিটি গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা নানা উদ্যোগ ও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। রিভার সিটিতে বিনোদন কেন্দ্র, আবাসিক এলাকা, বাণিজ্যিক এলাকা, ইকোনমিক জোন গড়ে তুলতে চাই।
পরিদর্শন শেষে মার্স ইন্টারন্যাশনালের চিফ অ্যাডভাইজার এস এম ফরমানুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, পদ্মায় জেগে ওঠা চরে রিভার সিটি প্রতিষ্ঠা করা যায় কিনা সেটার সম্ভাব্যতা যাচাই করতে এসেছি। প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ করছি। রিভার সিটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে উত্তরাঞ্চলের বাণিজ্যিক কেন্দ্র হবে রাজশাহী। বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
পরিদর্শনকালে ইন্টারন্যাশনাল মার্স গ্রুপের দলে ছিলেন এনভায়রনমেন্টাল কনসালট্যান্ট শাকিল আহমেদ, ফিন্যান্সিয়াল অ্যানালিস্ট নোমান আল হাসান, স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার এম এম হক রাজিব প্রমুখ।
এ সময় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মমিন, ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন, ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল হক সুমন, প্রধান প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নূর ইসলাম তুষার, ভারপ্রাপ্ত সচিব আলমগীর কবির, নগর পরিকল্পনাবিদ বনি আহসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
