জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার ধরঞ্জীতে কলেজছাত্র নাঈম হোসেন (২৩) হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বগুড়া সদর উপজেলার পীরগাছা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করেন র্যাব-৫ ও ১২ এর সদস্যরা।
জয়পুরহাট র্যাব-৫ সিপিসি-৩ ক্যাম্পের অধিনায়ক সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম মঙ্গলবার গভীর রাতে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে এই ঘটনায় শামছুল হক নামের আরেক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। যে বাড়ির মাটি খুড়ে নিহতের লাশের অংশবিশেষ পাওয়া গেছে তিনি ওই বাড়ির মালিক।
গ্রেফতার দম্পতি হলেন- রেজ্জাকুল (৪৩) ও তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন (৩৮)। তারা বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার গোপীনাথপুর এলাকার বাসিন্দা। গত কয়েকমাস ধরে তারা পাঁচবিবি উপজেলা ধরঞ্জী গ্রামে শামছুলের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব ক্যাম্পের অধিনায়ক রফিকুল ইসলাম জানান, শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) পাঁচবিবি উপজেলার ধরঞ্জী গ্রামে শামছুল ইসলামের বাড়ির টিউবওয়েলের পাশে টয়লেটের মাটি খুঁড়তে যান নির্মাণ শ্রমিকরা। গর্তের স্থানে লাউ গাছ লাগানোয় জংলা হয়ে গেছিল। নির্মাণ শ্রমিক লাউ গাছ সরানোর জন্য মাটিতে কোদালের কোপ দিতেই লাউ গাছসহ মাটি নিচে দেবে দুর্গন্ধ বের হতে থাকে। এরপর পুলিশে খবর দিলে সেখান থেকে মাথার খুলি হাড়গোড় ও সঙ্গে প্যান্টসহ গলিত লাশ পাওয়া যায়। পরে প্যান্ট দেখে লাশটি নাঈমের বলে শনাক্ত করে তার পরিবার।
এ ঘটনায় থানায় বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন নিহতের মা গোলাপি বানু। মামলার আসামিদের গ্রেফতারে জয়পুরহাট র্যাব-৫ সিপিসি-৩ ও বগুড়ার র্যাব-১২ সদস্যরা যৌথ অভিযান চালিয়ে বগুড়া সদরের পীরগাছা এলাকা এই দম্পতিকে গ্রেফতার করে। আর লাশ উদ্ধারের দিনই বাড়ির মালিক শামছুলকে গ্রেফতার করা হয়। তাদেরকে পাঁচবিবি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
পাঁচবিবি থানার ওসি জাহিদুল হক বলেন, লাশের প্যান্ট, বেল্ট দেখে পরিচয় নিশ্চিত হয়ে নিহতের মা মামলা করেছেন। মামলায় প্রেমের জেরে নাঈমকে হত্যা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ভাড়াটিয়া রাজ্জাকের স্ত্রী সাবিনার সঙ্গে প্রেমের কারণে তাকে হত্যার পর লাশ গুম করতে মাটির লুকিয়ে রাখা হয়। আসামিদের আগামীকাল আদালতে পাঠানো হবে এবং রিমান্ড চাওয়া হবে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২২ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে ধরঞ্জী বাজারে যাওয়ার কথা বলে বাইরে বের হয়ে বাড়ি ফেরেননি নাঈম। অনেক খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে ২৫ এপ্রিল পাঁচবিবি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার মামা জাহেদুল ইসলাম। জিডির পর প্রায় পাঁচ মাস ধরে নিখোঁজের সন্ধানে পুলিশ তৎপর থাকলেও খোঁজ মেলেনি। অবশেষে প্রায় পাঁচ মাস পর তার লাশ পাওয়া যায়।
