সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের সাঁওতালদের উচ্ছেদ, হামলা ও হত্যার প্রতিবাদে গাইবান্ধার মানববন্ধনে অংশ নিতে আসা সাঁওতালদের এমপি আবুল কালাম আজাদের লোকজন বাধা ও হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে বাধা দেওয়ার পরও সাঁওতালরা বিকল্প পথে মোটরসাইকেল ও অন্যান্য যানবাহনে করে গাইবান্ধায় এসে এই কর্মসূচিতে যোগ দেন। সোমবার বেলা ১২ টার দিকে গাইবান্ধা শহরের ডিবি রোডে সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, স্থানীয় বেসরকারী উন্নয়ণ সংস্থা জন উদ্যোগ বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী ও ছাত্র ইউনিয়ন যৌথভাবে এই কর্মসূচীর আয়োজন করে।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া রংপুর বিভাগীয় আদিবাসী ফেডারেশনের সভাপতি নরেণ বাসকে জানান, গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল পল্লী মাদারপুর, জয়পুরপাড়া ও পার্শ্ববর্তী দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার সাঁওতালরা একত্রিত হয়ে বাসযোগে গাইবান্ধা আসছিল। পথে গোবিন্দগঞ্জের কাটামোড় এলাকায় এমপি আবুল কালাম আজাদের লোকজন তাদের বাস থেকে নামিয়ে বাড়ির দিকে পাঠিয়ে দেয়। এবং কর্মসূচিতে যোগ না দেওয়ার জন্য হুমকি প্রদান করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘পরে ওই বাঁধা এড়িয়ে বিকল্প পথে কিছু সংখ্যক সাঁওতালরা মোটরসাইকেল ও অন্যান্য যানবাহনে করে গাইবান্ধায় এসে এই কর্মসূচিতে যোগ দেন।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা ৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি সুব্রত কুমার জানান, এবিষয়ে তার কাছে কেউ কোনও অভিযোগ করেনি।
সমাবেশে বক্তারা সাঁওতালদের গত ২৫ নভেম্বর গোবিন্দগঞ্জ থানায় দাখিল করা এজাহারের পরিপ্রেক্ষিতে গোবিন্দগঞ্জের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল আউয়াল, সাপমারা ইউপি চেয়ারম্যান শাকিল আহমেদ বুলবুল ও কাটাবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রফিকসহ তাদের সহযোগিদের গ্রেফতারের দাবি জানান। এছাড়া তারা গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান ও থানার ওর্সি সুব্রত কুমার সরকারকে অবিলম্বে প্রত্যাহার এবং ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন।
মানববন্ধনে জেলা সিপিবির সাবেক সভাপতি ওয়াজিউর রহমান রাফেল, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর জেলা শাখার সভাপতি জহুরুল কাইয়ুম, জেএসডির জেলা সভাপতি লাসেন খান রিন্টু, জেলা বাসদের সমন্বয়ক গোলাম রব্বানী, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রেবতী বর্মণ, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের জেলা শাখার সম্পাদক রিক্তু প্রসাদ, জনউদ্যোগের সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবর্ত্তী, রংপুর বিভাগীয় আদিবাসী ফেডারেশনের সভাপতি নরেণ বাসকে, দলিত জনগোষ্ঠীর নেতা রাজেশ বাসফোর, যুব ইউনিয়নের জেলা সভাপতি প্রতিভা সরকার ববি, সমাজকর্মী কামরুল হাসান জিলানী, আব্দুর রউফ ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জেলা সাধারণ সম্পাদক রানু সরকার প্রমুখ বক্তব্য দেন।
/এমডিপি/