X
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

৪ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে এক লাখ মানুষের সেবা

হিলি প্রতিনিধি
০৩ নভেম্বর ২০১৯, ১৪:১২আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০১৯, ১৪:৫৮

হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

নানা সমস্যায় জর্জরিত দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী হাকিমপুর (হিলি) উপজেলার একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। উপজেলার ১ লাখ মানুষের জন্য তৈরি ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি চলছে মাত্র ৪ জন চিকিৎসক দিয়ে। যন্ত্র ও জনবল সংকটের কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের। এছাড়া হাসপাতাল থেকে সব ধরনের ওষুধ না পাওয়ার অভিযোগও করেছেন রোগীরা।

হাকিমপুর (হিলি) উপজেলাবাসীর চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার জন্য ১৯৮৬ সালে হিলি স্থলবন্দরের অদূরে চন্ডিপুরে নির্মাণ করা হয় ৩১ শয্যার হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় ২০১৩ সালে ৩১ শয্যা থেকে বাড়িয়ে হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়।  হাসপাতালটিতে একজন শিশু বিশেষজ্ঞ, একজন মেডিসিন, একজন গাইনি ও একজন সার্জারিসহ ১৩ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও মাত্র ৪ জন চিকিৎসক রয়েছেন। তবে নার্সের কোনও সংকট নেই। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকার পর নবনির্মিত ভবনটি উদ্বোধন করা হলেও কেবিনগুলো এখনও বন্ধ রয়েছে।

রোগীদের দীর্ঘ লাইন

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রফিকুল ইসলাম ও সাজ্জাদ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত শনিবার থেকে হাসপাতালে ভর্তি আছি। ভর্তি হওয়ার সময় একবার ডাক্তার দেখেছেন। এরপর থেকে একজন ডাক্তার সকালে আর রাতে দেখতে আসেন। হাসপাতালে কোনও ইসিজি মেশিন ও আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন নেই। এ কারণে আমাদের ইসিজি ও আল্ট্রাসনোগ্রাম বাইরে থেকে করতে হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালে সব ওষুধ না থাকায় বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। এতে আমাদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে।’  

চিকিৎসা নিতে আসা নাজমা বেগম নামে এক নারী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার বাবুর ঠান্ডা লেগেছে, এরপর থেকে পাতলা পায়খানা করছে, সে কারণে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর ডাক্তার দেখালাম। ডাক্তার ৫টি ওষুধের নাম লিখে দিলেও হাসপাতাল থেকে ২টি দেওয়া হলো। বাকিগুলো বাইরে থেকে কিনতে হলো। আমরা গরিব মানুষ, টাকা পয়সা না থাকার কারণেই তো সরকারি হাসপাতালে এসেছি।’

বহির্বিভাগে রোগী দেখছেন চিকিৎসক

হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. রুপা সাহা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতালে প্রতিদিন বহির্বিভাগে প্রায় ৩ থেকে সাড়ে ৩শ’ রোগী আসে। এছাড়া ইনডোরে ৫০ জনের বেশি রোগীর সঙ্গে ইমার্জেন্সির রোগী তো আছেই। এতো রোগী সামলানোর জন্য আমরা মাত্র ৪ জন মেডিক্যাল অফিসার রয়েছি। চার জনের পক্ষে এতো রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া খুব কষ্টকর হয়। তবে প্রত্যেকটা রোগীকে ভালোভাবে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. শাকিল মাহমুদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৩ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও আমরা মাত্র ৪ জন চিকিৎসক কর্মরত আছি। প্রতিদিন ইনডোর, আউটডোর ও ইমার্জেন্সি এই ৩টি বিভাগে চিকিৎসা দিতে গিয়ে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এছাড়াও বেশ কিছুদিন ধরে অপারেটরের অভাবে হাসপাতালে ইসিজি মেশিনটি চালানো যাচ্ছে না। এছাড়া আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনও নেই। যে কারণে রোগ নির্ণয়ে অসুবিধা হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ কথা জানানো হয়েছে। অচিরেই দেওয়া হবে বলে তারা আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। পোস্ট অনুযায়ী চিকিৎসক থাকলে রোগীদের আরও ভালোভাবে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হতো। এবিষয়েও আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা আমাদের এ সমস্যা সমাধানেরও আশ্বাস দিয়েছেন। 

/জেবি/এমএমজে/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ছেলের মৃত্যুর ৪ দিনের মাথায় চলে গেলেন বাবা, গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া
ছেলের মৃত্যুর ৪ দিনের মাথায় চলে গেলেন বাবা, গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া
গাজা ও ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে কাজ করতে চায় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গাজা ও ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে কাজ করতে চায় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অনেক নার্ভাস ছিলেন সাইফউদ্দিন
অনেক নার্ভাস ছিলেন সাইফউদ্দিন
বকশিবাজার মোড়ে বাসের ধাক্কায় পথচারী নিহত
বকশিবাজার মোড়ে বাসের ধাক্কায় পথচারী নিহত
সর্বাধিক পঠিত
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
নদীতে ধরা পড়ছে না ইলিশ, কারণ জানালেন মৎস্য কর্মকর্তা
নদীতে ধরা পড়ছে না ইলিশ, কারণ জানালেন মৎস্য কর্মকর্তা