X
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪
২১ বৈশাখ ১৪৩১

ইয়াসমিন হত্যার ২৬ বছর, আজও থামেনি মায়ের কান্না

দিনাজপুর প্রতিনিধি
২৪ আগস্ট ২০২১, ১১:২৯আপডেট : ২৪ আগস্ট ২০২১, ১১:৩৭

আজ ইয়াসমিন ট্র্যাজেডি দিবস। ১৯৯৫ সালের ২৪ আগস্ট কতিপয় পুলিশ সদস্য কর্তৃক ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয় কিশোরী ইয়াসমিন। এর প্রতিবাদে আন্দোলনে নামলে জনতার উপর গুলি চালায় পুলিশ। গুলিতে নিহত হন সাত জন। আহত হন অনেকে। সেই থেকে দিনটি ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে পালন হয়ে আসছে।

দীর্ঘদিন পর মাকে দেখার জন্য সেদিন আকুল হয়ে ঢাকা থেকে দিনাজপুরে নিজের বাড়ি ফিরছিলো কিশোরী ইয়াসমিন। কিন্তু দিনাজপুরের কোচে উঠতে না পেরে পঞ্চগড়গামী একটি কোচে ওঠে। পরে কোচের লোকজন তাকে দশমাইল নামক স্থানে নামিয়ে দিয়ে সেখানকার চায়ের দোকানে জিম্মায় দেয়। ওই চায়ের দোকানে একটি পুলিশের ভ্যান এসে কিশোরী ইয়াসমিনকে নিয়ে যায়। পুলিশ সদস্যরা তাকে নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে। কিন্তু পথিমধ্যে ভ্যানের ভেতরেই ইয়াসমিনকে ধর্ষণের পর হত্যা করে পুলিশ সদস্যরা। হত্যার পর লাশ রাস্তার পাশে ফেলে পালিয়ে যায়। 

ভ্যানে রাখা ইয়াসমিনের লাশ

ঘটনার পর দিন লাশ পেয়ে প্রথমে দশমাইল এলাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। পরে তা ধীরে ধীরে আন্দোলনে রূপ নেয়। পুলিশের এই বর্বোরোচিত ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে দিনাজপুরবাসী বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। ক্ষুব্ধ জনতাকে দমাতে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। পুলিশের গুলিতে নিহত হন সামু, সিরাজ ও কাদেরসহ সাত জন নিহত হন। আহত হন তিন শতাধিক মানুষ। পরে আন্দোলনের মুখে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় জড়িত তিন পুলিশ সদস্যদের ফাঁসির রায় হয় ১৯৯৭ সালের ৩১ আগস্ট। ২০০৪ সালে সেপ্টেম্বরে তাদের ফাঁসির রায় কার্যকর হয়।

ঘটনার পর থেকে নানা আয়োজনে ২৪ আগস্ট ‘জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে এবারও দিনাজপুর শহরের বিভিন্ন ভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাচ ধারণ ও শোক র্যালিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।

দশমাইল এলাকায় নির্মিত ইয়াসমিনের স্মৃতিস্তম্ভ

ইয়াসমিন হত্যার ঘটনার ২৬ বছর পেরিয়ে গেছে। তবে একমাত্র মেয়েকে হারানোর বেদনায় আজও কান্না থামেনি মা শরিফা বেগমের।

তিনি বলেন, ‘সেদিন একজনের মারফত সংবাদ পাই, দশমাইলে এক কাজের মেয়েকে পুলিশ মেরে ফেলেছে। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সে আমার ইয়াসমিন। আমার মেয়ের জন্য যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের জন্য আমি দোয়া করি। আমার মেয়ের জন্য যারা আন্দোলন করেছেন তাদের সবার জন্যই আমি দোয়া করি।’

দিনাজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল বলেন, ওই সময় আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছিলেন সাংবাদিকরা। বিএনপির সময় মামলাটি লড়েছিলেন বাংলাদেশ সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট এম. আব্দুর রহিম। তবে সে সময় তৎকালীন সরকার যে ৮ দফা চুক্তি করেছিল, তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।

/এসএইচ/
সম্পর্কিত
৩২ কুর্দি সদস্যকে হত্যার দাবি তুরস্কের
‘সম্পত্তির লোভে’ মনজিলকে হত্যা: ৭ বছরেও শেষ হয়নি বিচার
২০০১ সালে আলোচিত সেই ধর্ষণ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার
সর্বশেষ খবর
মালয়েশিয়ায় আটকে পড়া বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ
মালয়েশিয়ায় আটকে পড়া বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ
চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে মুক্তিযোদ্ধাকে গাছে বেঁধে বিচারের হুমকি
চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে মুক্তিযোদ্ধাকে গাছে বেঁধে বিচারের হুমকি
রোগীকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে এসে সড়কে প্রাণ গেলো ৩ জনের
রোগীকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে এসে সড়কে প্রাণ গেলো ৩ জনের
তীব্র গরমে বেড়েছে রিকন্ডিশন্ড এসির চাহিদা
তীব্র গরমে বেড়েছে রিকন্ডিশন্ড এসির চাহিদা
সর্বাধিক পঠিত
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
গাজীপুরে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ, বগি লাইনচ্যুত
গাজীপুরে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ, বগি লাইনচ্যুত